সংখ্যালঘু নির্যাতন তদন্ত করুন, দোষী হলে নিজের বিচার দাবি করছি: ডা. শফিকুর রহমান

­যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯: ৩৭
যশোর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। তারাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। ২০১৩ সালে জাতিসংঘে চিঠি লিখে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছিলাম। এখনো বলছি, তদন্ত করুন। দোষী প্রমাণিত হলে নিজের বিচার দাবি করছি।’

আজ শুক্রবার দুপুরে যশোর ঈদগাহে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়, দেশে সুশাসন কায়েম করা আমাদের উদ্দেশ্য। আপনাদের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে দুই-একটি জিনিস চাই। আমরা যদি দেশের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করি, তাহলে আপনাদের অন্তরের ভালোবাসা চাই। আপনারা যেন আমাদের ভালোবাসা উপহার দেন। ভালোবাসার সঙ্গে যেন সমর্থন ও সহযোগিতা পাই। সমর্থন ও সহযোগিতার পাশাপাশি জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেন আপনাদের পাশে পাই। এই জাতিকে বদলে দেওয়ার জন্য যেন আপনাদের অন্তরে একটা জায়গা পাই। এই চারটা জিনিস যদি দেশবাসী আমাদের উপহার দেয়, আমরা দেশবাসীর কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।’

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ পেলে এ দেশে চাঁদাবাজির অস্তিত্ব থাকবে না। দখলদারের অস্তিত্ব থাকবে না। ঘুষ থাকবে না। আমরা ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের প্রশ্রয় দেবে না, এমন জাতি গড়তে চাই।’

নারীর অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যয় জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে নারীর অধিকার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়। আমরা নাকি নারীদের বন্দী করে রাখব। আমরা বলতে চাই, জামায়াতে ইসলামী নারীদের মায়ের জাতি হিসেবেই দেখতে চায়। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হবে। তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।’

যশোরের উন্নয়ন বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে ডা. শফিক বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলের প্রাচীন জেলা যশোর। পুরোনো জেলা হিসেবে যশোরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যশোরবাসী ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শহরে পার্ক নেই, মাঠ নেই। উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে মানুষের পা ছুঁয়ে নেয়, ক্ষমতায় গেলে তারা ভুলে যায়। ভাবে পাঁচ বছর পর আবার পা ছুঁয়ে নিলেই হয়ে যাবে। মাঝখানে তারা মানুষকে মনে রাখে না।’

যশোর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা যাদের চোর, ডাকাত হিসেবে চিনি, তাদের সক্ষমতা কতটুকু? কিন্তু কলমের খোঁচায় তারা হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতি করেছে। আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ডাকাতি করে ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের পুঁজি দিতে পারছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনীতিকে সচল করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই, অর্থনীতি আরও গতিশীল হোক। বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আরও উদ্যোগী হোক।’

দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে ডা. শফিক বলেন, ‘একদল চাঁদাবাজি করে চলে গেছে। আরেক দল আসুক, আমরা চাই না। দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, হাতবদল হয়েছে। এ জন্য তো এত মানুষ শহীদ হননি। আমরা যেন শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করি। এসব ঘৃণিত কাজ করলে শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। আপনারা এই ঘৃণিত কাজ করবেন না। ফুটপাত, হাটঘাট, বালুমহাল, জলমহাল দখল, চাঁদাবাজিতে কোনো নেতা-কর্মী পা দেবেন না।’

মিথ্যা মামলায় নিরীহ মানুষকে হয়রানি প্রসঙ্গে ডা. শফিক বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। হত্যা মামলায় ৪০০-৫০০ মানুষকে আসামি করা হচ্ছে। একজন মানুষ হত্যায় এত লোক কীভাবে জড়িত থাকে? প্রকৃত অপরাধীকে আসামি করে মামলা করুন। মামলা করে অর্থ–বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।’

কর্মী সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, মাওলানা আজিজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির অধ্যাপক আলী আযম, সাতক্ষীরা জেলা আমির শহিদুল ইসলাম মুকুল, মাগুরা জেলা আমির এম বি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, শহীদ আবদুল্লাহর বাবা আবদুল জব্বার, যশোর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর পূর্ব জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আবদুল আজিজ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আবদুল মান্নান, যশোর জেলা কর্মপরিষদ সদস্য গাজী এনামুল হক, ব্যবসায়ী আবদুল কাদের প্রমুখ।

নিপোর্ট মনিরামপুর: নানা খাতে টাকা লোপাট নামমাত্র মাঠ প্রশিক্ষণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুবি কমিটি বিলুপ্ত, রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত

শুধু সংরক্ষণব্যবস্থা না থাকায় পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়: কৃষি বিপণনের ডিজি

এবার পৌষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ