‘রাত পোহালেই রোজা। ঘরে তেমন কিছু নেই। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে তিন-চার শ টাকা পাই। এ আয় দিয়ে চার সদস্যের সংসার চলে না। মাছ-মাংস কিনব কীভাবে? বর্তমানে পোলট্রি মুরগির ঠ্যাংয়ের কেজি ২২০ টাকা। তাহলে আমাদের মতো গরিব মানুষ খাবে কী?’
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামের মো. রবিউল মোল্লা (৩৭) আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হতাশ কণ্ঠে কথাগুলো বলেন।
পাশেই আরেক ভ্যানচালক মো. ইমন (৩৫) যাত্রীর আশায় দাঁড়িয়ে আছেন। সুরশাইল গ্রামের এক বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। ইমন বলেন, ‘রোজায় পরিবারের সদস্যদের একটু বাড়তি ও ভালো খাবারের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে মাংসের প্রতি চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু কিনব কীভাবে?’
ইমন আরও বলেন, ‘পোলট্রি মুরগির কেজি ২৫০ টাকা। কক, সোনালি ও লেয়ার মুরগি প্রতিকেজি ৩৮০ টাকা এবং দেশি মুরগির কেজি ৬০০ টাকা। গরুর মাংস ৮২০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা। তাই মাংসের স্বাদ পেতে মাঝেমধ্যে পোলট্রি মুরগির ঠ্যাং কিনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেতাম। তার কেজিও বর্তমানে ২২০ টাকা।’
মুরগির কেজি ২৫০ টাকা হলে, মুরগির ঠ্যাংয়ের কেজি ২২০ টাকা কীভাবে হয়, এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, কেউ চাইলে মুরগির ঠ্যাং এক কেজির কম আধা কেজি বা ২৫০ গ্রামও কিনতে পারে। কিন্তু একটি মুরগি কিনতে গেলে তার ওজন দুই-তিন কেজি হয়। অর্থাৎ একটি মুরগির দাম দাঁড়ায় পাঁচ-সাত শ টাকা। এ কারণে অনেকের পক্ষেই মুরগি কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
মুরগি ব্যবসায়ী আনোয়ার গাজী ও মিজান শেখ বলেন, ‘বর্তমানে মোকামে মুরগির দাম চড়া। হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিক্রি করা মুরগির ঠ্যাং আমরা কিনে রাখি। সেসব গরিব মানুষেরা কিনে নেয়।’
দ্রব্যমূল্য নিয়ে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেসা বলেন, ‘কেউ যাতে অতি মুনাফা করতে না পারে, তাই আসন্ন রমজান মাস ঘিরে বাজার মনিটরিং চলছে। তা ছাড়া কেউ অভিযোগ করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।’