নিম্নচাপের প্রভাবে কুষ্টিয়াতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ নিয়ে গেল ৪৮ ঘণ্টায় ২৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক মো. আল আমিন।
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিম্নচাপের প্রভাবে গত শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শনিবার বিকেলে রূপ নেয় ভারী বৃষ্টিপাতে। পরে ওই দিন মধ্যরাত থেকে আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত দমকা জড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হয়।’
আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. আল আমিন বলেন, ‘এর আগে ২০১৮ সালে ৭৯ মিলিমিটার, ২০১৯ সালে ৪৪,২০২০ সালে ৪৯,২০২১ সালের জুন মাসে ১০৫,২০২২ সালে ৬৪ ও ২০২৩ সালে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।’
বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত ও জড়ো হাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, খামারিসহ নিম্ন–মধ্যম আয়ের মানুষেরা। জলাবদ্ধতায় ডুবেছে কৃষকের ফসল, ভেসে গেছে পুকুর। ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি ও গাছপালা।
আজ কুমারখালীর যদুবয়রা, পান্টি, চাঁদপুর, সদকী, জগন্নাথপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
সদকী ইউনিয়নের গড়েরমাঠ এলাকায় প্রায় ২২ বিঘা জমির পুকুরে মাছ এবং পুকুরপাড়ে সবজি চাষাবাদ করেন খামারি সুজন আলী পলাশ। তিনি বলেন, ‘মাস দুই পরেই প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ বিক্রির প্রত্যাশা ছিল তার। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পুকুর ভেসে গেছে। লাউ ও ঝিঙে সবজি নষ্ট হয়েছে। মাছ ও সবজিতে তার প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
অটোচালক সাগর হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া হয়। সকাল থেকে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। পথেঘাটে তেমন মানুষ নেই। মাত্র ১১০ টাকা আয় হয়েছে।’
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি ও জড়ো হাওয়ায় ৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৩০ হেক্টর মাস কালাই, ৬০ হেক্টর সবজি ও ৬০ হেক্টর জমির কলা খেতের আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস।