যশোরের চৌগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিত নেতারা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন নতুন কমিটিতে পদ পাওয়া কয়েকজন নেতাও। আজ শনিবার সন্ধ্যার দিকে তাঁরা চৌগাছা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পদবঞ্চিত নেতাদের অভিযোগ, বর্তমান কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। বিএনপি-জামায়াত ঘরানার পরিবারের সন্তানদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে, যে কারণে তাঁরা এই কমিটিকে অবৈধ মনে করেন এবং বাতিল চান। এর আগে দীর্ঘ ১৬ মাস কমিটিবিহীন থাকার পর আজ শনিবার দুপুরে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের প্যাডে হাতে লেখা সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটিকে আগামী তিন মাসের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
পদবঞ্চিত ও নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া কয়েক নেতা জানান, নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন কমিটি বিলুপ্ত করে সাত দিনের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের কাছে সিভি জমা দেওয়ার জন্য আগ্রহীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে সাড়া দিয়ে ১০৭ নেতা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। এরপর আজ ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়।
কমিটির তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হতেই ছাত্রলীগে পদবঞ্চিতরা জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে জড়িয়ে নানা সমালোচনামূলক স্ট্যাটাস দিতে শুরু করেন। কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে সিনিয়রিটি না মানা, অসাংগঠনিক ও বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তানদের পদ-পদবি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
পরে সন্ধ্যায় চৌগাছা শহরে পাঁচ যুগ্ম আহ্বায়কের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঘোষিত কমিটিকে অবৈধ বলে স্লোগান দেয়।
ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক-২ হাসান রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, সে কখনো ছাত্রলীগের রাজনীতি করেনি। তার সঙ্গে কীভাবে রাজনীতি করব। তা ছাড়া সে বিএনপি ঘরানার মানুষ। তাঁর চাচা স্থানীয় বিএনপির নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান। এই কমিটি মানি না। এটি বাতিল করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে একই সঙ্গে যারা রাজপথে থাকে, সেই যোগ্য ব্যক্তি দিয়ে নেতা নির্বাচন করার দাবি জানাই।
তবে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তরুণ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চৌগাছার কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ বৃহৎ সংগঠন, অনেকেই নেতৃত্বে আসতে চাইবে। সবার চাহিদামতো স্থান দেওয়া সম্ভব না। কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুমোদন দেওয়া কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সারজান দেওয়ান সোহেলকে। এ ছাড়া সাতজন যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন আকরামুল ইসলাম, হাসান রেজা, সফিউর রহমান রাথিক, আব্দুল করিম, রুবেল হোসেন, ফিরোজ হোসেন ও সাগর কুমার বিশ্বাস।
২৩ জন সদস্য হলেন মিনহাজ রহমান জিসাদ, মিকাইল ইসলাম সোহেল, জোবায়ের হোসেন রকি, ফয়সাল হোসেন রানা, মাহাবুবুর রহমান রিয়াজ, হাসিবুল হাসান শান্ত, রেজাউল করিম সাগর, ইয়াছিন আহাম্মেদ শান্ত, সানজিদ কবির, জাহিদ হাসান শোভন, হাবিবুর রহমান পাভেল, মামুন হোসেন অনিক, সাকিব পারভেজ, নিশাদ আরেফিন অন্তু, আক্তারুল ইসলাম, হযরত আলী, শাফায়েত হোসেন আকাশ, রিফাত আরেফিন, আল আমিন নয়ন, জয়ন্ত কুমার, বাবুল হাসান, আবিদুজ্জামান জিসান ও সোহাগ আলী।