বাগেরহাট প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে বন বিভাগ। বনের বিভিন্ন স্থানে মিলছে বন্য প্রাণীর মরদেহ। ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে বনের ক্ষত।
আজ মঙ্গলবার রাতে সুন্দরবনে ৩৯টি মৃত হরিণ ও একটি বুনো শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১৭টি হরিণ আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনার বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো।
এর আগে দুপুর থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী বনের বিভিন্ন স্থান থেকে ২৬টি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া যায়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আরও প্রায় ১৭টি হরিণ।
এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন বিভাগের ২৫টি টহল ফাঁড়ি। লবণপানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে কমপক্ষে ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর।
সুন্দরবন বিভাগের খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুন্দরবনের কটকা ও দুবলা এলাকাসহ বনের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হরিণের পাশাপাশি আরও বন্য প্রাণী মারা যেতে পারে। সেসব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বন বিভাগের টহল অফিসগুলোতে টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল, ওয়্যারলেস সিস্টেম ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব বন বিভাগের কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সুন্দরবনের বন্য প্রাণীরা জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে অভ্যস্ত। সাধারণত জলোচ্ছ্বাস হলে বন্য প্রাণীরা উঁচু স্থান ও গাছে আশ্রয় নেয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বনের ভেতর অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ফলে বনের উঁচু স্থান তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণীদের আশ্রয় নিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অধিক জলোচ্ছ্বাসের ফলে নিরাপদ আশ্রয়ে না যেতে পেরে হরিণগুলোর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।