Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > খুলনা

৪ বার বন্ধের পরও চলছে ইটভাটার কার্যক্রম

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

৪ বার বন্ধের পরও চলছে ইটভাটার কার্যক্রম

কেশবপুরের রোমান ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে দুই সচিবসহ ১৩ জনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানাসহ প্রশাসন চারবার বন্ধ করে দেওয়ার পরও ফের কার্যক্রম শুরু করেছে পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ এই ইটভাটা। 

বেলার আইনি নোটিশে ভূমি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দুজন সচিবসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, যশোরের জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, যশোরের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এর কারণ জানাতে বলা হয়েছে। 

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার কাস্তা বারুইহাটি চৌরাস্তা মোড়ে ইটভাটাটি অবস্থিত। ২০১৭ সালে সাতবাড়িয়া গ্রামের দুই ভাই আবু বক্কর সিদ্দীক ও মতিয়ার রহমান এবং পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন রোমান ব্রিকসের কার্যক্রম শুরু করেন। ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এবং ২৯ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে ওই ইটভাটার কার্যক্রম চালানোর জন্য অনাপত্তিপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সেসব শর্ত না মানায় ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইটভাটা বন্ধ করতে ওই এলাকার লোকজন ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। এরপর ভাটা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। আন্দোলন চলাকালে ভাটার মালিকেরা ভুক্তভোগী কৃষকদের মারধরসহ ভাটাবিরোধী এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে এবং প্রভাব খাঁটিয়ে ভাটা পরিচালনা করে আসছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি যশোর জেলা কার্যালয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট মিজানুর রহমান রোমান ব্রিকস সরেজমিনে পরিদর্শনকালে ইটভাটাটির অনুকূলে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত বা পরিবেশগত কোনো ছাড়পত্র না পেয়ে এবং ইটভাটার অনুকূলে জেলা প্রশাসকের ইট পোড়ানোর লাইসেন্স না থাকায় ভাটার যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ভাটার কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতে রোমান ব্রিকসের মালিক আবু বক্কর সিদ্দীককে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। 

ওই বছরের ১৫ নভেম্বর যশোর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম নওশাদ ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রোমান ব্রিকস বন্ধ করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। 

এরপর আবারও ২০২০ সালে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হলে ১২ এপ্রিল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানা অভিযান চালিয়ে ওই ভাটা বন্ধ করে দেন। 

এ ছাড়া ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী জনগণের পক্ষে কাস্তা গ্রামের নুর আলী মোড়ল হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা দায়ের করেন। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে উচ্চ আদালত ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ইটভাটা পরিচালনার উপযুক্ত স্থান না হওয়ায় রোমান ব্রিকস অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। 

উচ্চ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে চলতি বছর ফের কার্যক্রম শুরু করলে এর প্রতিকার চেয়ে বাংলাদেশ বেলার পক্ষে অ্যাডভোকেট এস হাসানুল বান্না গত ২৬ জানুয়ারি দুই সচিব এবং ওই ইটভাটার তিনজন মালিকসহ ১৩ জনের কাছে (নোটিশ অব ডিমান্ড ফর জাস্টিস) আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। 

নোটিশে বলা হয়েছে, মেসার্স রোমান ব্রিকস নামক ইটভাটাটি সব আইনি বিধান লঙ্ঘন করে আবাসিক এলাকার কাছে তিন ফসলি জমিতে কোনো প্রকার অবস্থানগত, পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং ইট পোড়ানোর লাইসেন্স ছাড়াই সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। 

উচ্চ আদালতে মামলার বাদী কাস্তা গ্রামের নুর আলী মোড়ল বলেন, ভাটার পাশে বারুইহাটি মহিলা দাখিল মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক, কিরাতী মাদ্রাসা ও মন্দির অবস্থিত। এর আধা কিলোমিটারের মধ্যে ভালুকঘর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সিনিয়র মাদ্রাসা রয়েছে। ভাটার গাড়িগুলোর জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও সড়কে চলাচলকারী মানুষ সব সময় আতঙ্কে থাকে। ভাটার কারণে এর আশপাশের জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। 

এদিকে রোমান ব্রিকসের মালিক মতিয়ার রহমান ওই ভাটার কোনো লাইসেন্স না পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘কেশবপুরের কোনো ভাটারই লাইসেন্স নেই। তাঁরা ভাটার কার্যক্রম চালাতে পারলে আমরাও চালাতে পারি। তবে খুব শিগ্‌গিরই লাইসেন্স পেয়ে যাব।’ 

যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাঈদ আনোয়ার বলেন, ‘রোমান ব্রিকস পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু অবস্থানগত কারণে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন রোমান ব্রিকস সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ‘বেলার আইনি নোটিশ পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে পাঠানো হয়েছে।’

ওষুধ নেই, সংকট লোকবলেরও

তক্তা দিয়ে চিত্রা নদী পারাপার

ইউএনও দপ্তরের নাজিরকে মারপিট, থানা যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার

যশোরে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ৩

খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কার

মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ: বিক্ষুব্ধ জনতার থানা ঘেরাও, সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ছত্রভঙ্গ

রমজানের প্রথম জুমায় ষাটগম্বুজ মসজিদে মুসল্লিদের ঢল

খুলনায় চালকের গলা কেটে ইজিবাইক ছিনতাই

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ‘ধর্ষণের’ শিকার শিশু, শ্বশুর ও স্বামী পুলিশ হেফাজতে

সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে ‘পরকীয়া’, খালুর ২ চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা ক্ষুব্ধ যুবকের