সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে ধর্মীয় অবমাননামূলক মন্তব্য করা হয়েছে অভিযোগ তুলে নড়াইলের লোহাগড়া থানার দীঘলিয়ার সাহাপাড়ায় হামলায় তিনটি হিন্দু বাড়ি, ছয়টি দোকান, দুটি মন্দির ভাঙচুর ও একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় লোহাগড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত শনিবার (১৬ জুলাই) দীঘলিয়া এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিন কচি বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে আকাশ সাহার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলাতে এরই মধ্যে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন হামলার ঘটনায় মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় দুজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন দীঘলিয়া গ্রামের মৃত ইসাহাক মৃধার ছেলে ব্যবসায়ী রাসেল মৃধা (৩৮) ও চরমাউলী গ্রামের কবির গাজী (৩২)।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে ধর্মীয় অবমাননামূলক মন্তব্য করা হয়েছে অভিযোগ তুলে নড়াইলের লোহাগড়া থানার দীঘলিয়ার সাহাপাড়ায় হামলার ঘটনা ঘটে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে সন্ধ্যা অবধি এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের (হিন্দু) পাঁচ থেকে ছয়টি বাড়িতে ভাঙচুর এবং একটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্থানীয় একটি মন্দিরের চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুরসহ ইট ছুড়েছে বিক্ষুব্ধরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর গুজব ছড়িয়ে পড়ে, দীঘলিয়ার সাহাপাড়ার কলেজছাত্র আকাশ সাহা ফেসবুকে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এরপর বিক্ষুব্ধ লোকজন আকাশ সাহার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে তাঁদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে বিকেলে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। বিক্ষুব্ধ লোকজন একপর্যায়ে সাহাপাড়ার গোবিন্দ সাহা, তরুণ সাহা, দিলীপ সাহা, পলাশ সাহার বাড়িসহ পাঁচ-ছয়টি বাড়ি ভাঙচুর করে। এর মধ্যে গোবিন্দ সাহার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া সাহাপাড়ার মন্দিরের চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুরসহ সেখানে ইট ছুড়েছে বিক্ষুব্ধরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়।