রেললাইনে চলছে ট্রেন। লেভেল ক্রসিংয়ে সড়কপথে থেমে আছে ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান। সড়কের পাশে ‘অনুমোদিত লেভেল ক্রসিং, নিজ দায়িত্বে পার হইবেন’ লেখা দুটি সাইনবোর্ড দেখে মানুষ ট্রেন চলাচলের সময় দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি এমন দৃশ্য দেখা গেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া কলেজ মোড় এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ে।
স্থানীয় লোকজন জানান, লেভেল ক্রসিংয়ের পাশেই রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপজেলার প্রধান শহর। প্রতিদিনই হাজারে মানুষ যাতায়াত করছেন। গেটকিপার না থাকায় সেখানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ বিষয় রেল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো শর্তেও কোনো সুফল মিলছে না। দ্রুত গেটকিপার নিয়োগের দাবি জানান স্থানীয়রা।
তেবাড়িয়া কলেজ মোড়ের লেভেল ক্রসিং এলাকায় সম্প্রতি দেখা গেছে, লেভেল ক্রসিং রয়েছে। গেটকিপার থাকার জন্য পাকাঘর, টয়লেট ও টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। তবে ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। লেভেল ক্রসিংয়ের দুপাশে দায়সারা সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড গাছে টাঙানো হয়েছে। তাতে লেখা ‘সাবধান, সামনে অনুমোদিত লেভেল ক্রসিং, নিজ দায়িত্বে পার হইবেন।’ পথচারীরা এদিক সেদিক তাকিয়ে লেভেল ক্রসিং এলাকা পারাপার হচ্ছেন।
একটি আন্তনগর ট্রেন কুমারখালী স্টেশন থেকে রাজবাড়ীর দিকে যাওয়ার সময় লেভেল ক্রসিংয়ে নামানো হয়নি লোহার প্রতিবন্ধক। পথচারীদেরকে স্বেচ্ছায় সড়কের ওপর ট্রেন চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
লেভেল ক্রসিং এলাকার চা বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, ‘লোক না থাকায় প্রতিদিনই প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রেন আসার সময় দোকান ফেলে বারবার ছুটে যেতে হয়। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা হচ্ছে। তবুও কাজের কাজ হচ্ছে না। দ্রুত সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার।’
সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সব সময় ব্যস্ত থাকে বলে জানান ভ্যানচালক আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘রেলগেটে পথচারীরা এদিক সেদিক থাকিয়ে পারাপার হন। লোহার দণ্ড সব সময় ওঠানো থাকায় টের পাওয়া যায় না কখন ট্রেন আসে। তাই ঝুঁকি নিয়েই চলতে হয়।’
এ বিষয়ে কুমারখালী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় মোট আটটি রেলগেট (লেভেল ক্রসিং) আছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র জনবল সংকট থাকায় তেবাড়িয়ায় গেটকিপার নেই। এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ লেভেল ক্রসিং এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। গেটকিপারের জন্য রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা চলছে।’