বাগেরহাট পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দের একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুনে। প্রকল্পের অধীনে পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তবে প্রায় পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ বর্জ্যকেন্দ্র নির্মিত হয়নি।
অধিগ্রহণ করা ওই জমিতেও যত্রতত্র ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লার গন্ধ ও বৃষ্টির সময়ে ময়লার পানিতে অতিষ্ঠ মাঝিডাঙ্গা এলাকার অর্ধশতাধিক পরিবার। শুধু তা-ই নয়, নির্ধারিত জায়গা থাকার পরও দীর্ঘদিন ধরে শহরের প্রবেশদ্বারে ময়লা ফেলায় দুর্ভোগে পড়ছে পথচারী ও যাত্রীরা।
জেলার কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরে প্রবেশের জন্য সড়ক দিয়ে কিছু দূর এগোলেই সড়ক বিভাগের কার্যালয়ের আগে বাসাবাটি নামক স্থানে চোখে পড়বে ময়লার ভাগাড়। পৌর পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ভ্যানে করে নিয়ে বাসাবাড়ির ময়লা এনে ফেলছেন সড়ক ঘেঁষে। পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ময়লা এনে ফেলা হচ্ছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কার্যালয় এবং আবাসিক এলাকার পাশের ওই জায়গায়।
দীর্ঘদিন ধরে ফেলা ময়লার স্তূপে সড়কের পাশের গভীর লেকটির একাংশ ভরাট হয়ে গেছে। পাশে থাকা সরকারি খালটিও ভরাট হওয়ার পথে। বাসাবাড়ি ও বাজারের নানা ধরনের ময়লার দুর্গন্ধে সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় মুখ লুকান পথচারীরা। দুর্গন্ধের কারণে সব থেকে বিপাকে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেক বাড়ির ভাড়া বাসিন্দারা নেমে গেছেন ময়লার গন্ধে। অতি দ্রুত নির্দিষ্ট স্থানে পৌরসভার ময়লা ফেলা এবং আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সরদার তৈয়াবুর রহমান বলেন, ‘ময়লার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। এ কারণে আমাদের অনেকের বাড়ির ভাড়াটে চলে গেছেন। ময়লায় স্তূপের পাশের খালটিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। বৃষ্টির সময় বাড়িঘরে ময়লাযুক্ত পানি উঠে যায়। সে যে কী অবস্থা, যাঁরা এই অবস্থায় না পড়েছেন, তাঁরা বুঝবেন না।’
আলমগীর হাওলাদার নামের এক ভ্যানচালক বলেন, বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে সাধনার মোড়ে যাওয়ার পথে এই জায়গায় এত গন্ধ যে নাক-মুখ বন্ধ করেও চলা কষ্টকর।
বাগেরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী টি এম রেজাউল হক রিজভী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাগেরহাট পৌরসভার বর্জ্য ডাম্পিংয়ের জন্য পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে এখনো পূর্ণাঙ্গ বর্জ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি; যে কারণে কিছু জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে নাগরিকদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য “উপকূলীয় শহর জলবায়ুসহিষ্ণু প্রকল্প” নামের ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটির কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে।’