মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় দুই সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের বেশির ভাগ সবজি খেতে পানি জমেছে। তাতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম বাড়ছে। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
আজ রোববার মাগুরার কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজিতে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। কাঁচা মরিচের কেজি ৫০০ টাকা, পটল ৯০ টাকা, বরবটি ৭০, সবুজ শাক ৬০, উস্তে ১০০, লাউ ১০০, কচুর মুখী ৭০, পুঁই শাক ৬০, ঢেড়শ ৬০, মিষ্টি কুমড়ো ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহে এসব সজবির দাম কেজিতে গড়ে ১০ থেকে ২৫ টাকা কম ছিল।
পুরোনো বাজারের খুচরা বিক্রেতা রশিদ মিয়া বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দুই দিন ধরে বৃষ্টি নে। এর আগে এক মাস বৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। ফলে সবজির এলাকা আলিধানী, বেলনগর, হাজিপুর, শিবরামপুর, শালিখার তালখড়িসহ নানা জায়গায় পানি জমেছে। এ জন্য সেখান থেকে সবজি কম আসছে। সামনে নতুন করে সবজি জমিতে না হলে এই সংকট কাটবে না।’
নতুনবাজারে লাউ কিনতে আসা গৃহিণী লতিফা বানু বলেন, ‘এই সপ্তাহে তরকারির দাম বেশি বেড়েছে। এমনকি প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। এখন ৫০০ টাকার শুধু তরকারি কেনা লাগছে। মাছ বা দুধ কেনা যাচ্ছে না। বিক্রেতাদের কিছু বললে মারমুখী আচরণ করছে। বাজারে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। এ জন্য সঠিক বাজার মনিটরিং দরকার সরকারের পক্ষ থেকে।’
দাম বেশি হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতা সবজি বেচাকেনা করতে পারছেন না বলে জানান খুচরা বিক্রেতা সমিতির সভাপতি জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, ‘এখন অনেক বিক্রেতাই বেশি সবজি কিনতে পারছে না। কারণ দাম বেশি হওয়ায় তা কিনে বিক্রি করাটা কঠিন হয়ে গেছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি, ঝগড়া কেউ করতে চায় না। এ জন্য খুচরা বাজারে সবজির সংকট দেখা দিয়েছে।’
এ বিষয়ে মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নভেম্বরে বোরো মৌসুম শুরু হচ্ছে। এখন টানা বৃষ্টিতে কিছু জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বলা যায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিম্নাঞ্চলের কৃষি জমিতে। এর ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পানি কমে গেলে খুব তাড়াতাড়ি সবজিসহ অন্য ফসল আবার চাষাবাদ শুরু হবে। তখন বাজারে কৃষিপণ্যের সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে।’