নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে কৃষকের ছয়টি বসতঘর ভেঙে ঘরে থাকা ধান-চাল খেয়ে সাবাড় করেছে বন্য হাতির দল। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাকুগাঁও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ৩০-৩৫টি বন্য হাতির একটি দল এই তাণ্ডব চালায়।
এদিকে বন্য হাতি তাড়াতে গিয়ে গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস (৩৮) স্ট্রোক করে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আহত হয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক।
স্থানীয় বন বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্যের সন্ধানে প্রায়ই এই এলাকার লোকালয়ে নেমে আসে বন্য হাতির দল। গতকাল রাত ৯টার দিকে উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় তাণ্ডব চালায় ৩০-৩৫টি বন্য হাতির দল। এ সময় এরা কৃষক রঞ্জিত ঘোষ, সিন্ধু ঢালু, নিরঞ্জন রবিদাস ও সুমন রবিদাসের ছয়টি বসতঘর ভেঙে ফেলে। পরে ঘরে থাকা আসবাব গুঁড়িয়ে এবং ধান-চাল খেয়ে ও ছিটিয়ে নষ্ট করে। এ ছাড়া কৃষক রুপেন ঢালুর (৪৫) ২০ শতাংশ জমির আমন বীজতলা পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করেছে।
বন্য হাতির দলটি বসতঘর ভেঙে কৃষক রঞ্জিত ঘোষের ২০ মণ ধান ও পাঁচ মণ চাল, সিন্ধু ঢালুর ২০ মণ ধান ও চাল, নিরঞ্জন রবিদাসের ১৫ মণ ধান এবং সুমন রবিদাসের ১৫ মণ ধান–চাল খেয়ে ও মাটিতে ছড়িয়ে নষ্ট করে। এ সময় ঘরের আসবাব ও ফ্রিজ ভেঙে ফেলে এবং বাড়ির উঠানে থাকা কাঁঠাল ও আমগাছ উপড়ে ফেলে। এ ছাড়া কৃষক রঞ্জিত ঘোষের গোয়ালঘর ভেঙে একটি গরুকে আক্রমণ করে হাতির দল।
ভুক্তভোগী কৃষক রঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘আমার সারা বছরের খাওনের ধান চাল আছিল ঘরে। আত্তি তো ঘর ভাইঙ্গা আমার আসবাবপত্রসহ সব শেষ কইরা দিল। অহন সারা বছর পরিবার লইয়া কী খামু?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলক রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাতির দলটি বর্তমানে নাকুগাঁও এলাকার পাহাড়ে অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।