জামালপুরের ইসলামপুরে আসাদুল্লাহ ইসলাম আশা (২৮) নামের এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে দিনমজুরের স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার চরপুটিমারী ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (১) আদালতে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন ওই নারীর স্বামী। তাঁর বিচারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার উপজেলার চরপুটিমারি ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর বাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। তবে এসব বানোয়াট বলে মন্তব্য করেছেন ইউপি সদস্য আসাদুল্লাহ ইসলাম আশা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আসাদুল্লাহ ইসলাম আশা আগ্রাখালী গ্রামের বাসিন্দা এবং তিনি চরপুটিমারী ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির আলীর ছেলে। পূর্ব পরিচিত হওয়ার সুবাদে ওই নারীর বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর। তিনি কয়েক বার ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সাহস করেনি ওই নারীর পরিবার। গত সোমবার ৯টার বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন ওই নারী। পথে একা পেয়ে আসাদুল্লাহ ইসলাম আশা ওই নারীর মুখে কাপড় পেঁচিয়ে পাশের একটি ভুট্টা খেতে নিয়ে যান এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ওই নারীকে ভুট্টা খেত থেকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে আসাদুল্লাহ আশার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে জামালপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (১) আদালতে মামলা করেন। পরে শুনানি শেষে মামলাটি আমলে নিয়ে ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই নারীর স্বামী বলেন, ‘আমরা সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। আসাদুল্লাহ মেম্বার আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। দলের প্রভাব দেখিয়ে তিনি অপরাধ করে যাচ্ছেন। আমরা তাঁর শাস্তি চাই।’
এ নিয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আসাদুল্লাহ ইসলাম আশার মোবাইলফোনে বলেন, ‘আমি নির্দোষ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনাটি শুনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও ইসলামপুর আসনের এমপি ফরিদুল হক খান দুলাল সাহেব আমাকে দেখা করতে বলেছেন। আমি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। দেখি তিনি কী ব্যবস্থা নেন।’
চরপুটিমারী ইউপি চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টার বলেন, ‘লোকমুখে ঘটনাটি শুনেছি। তবে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। সরজমিনে খোঁজ খবর নিব।’
ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘আদালত থেকে এখনো কোনো কাগজ পাইনি। আদালতের আদেশ পেলে আইনানুসারে পদক্ষেপ নেব।’
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. তানভীর হাসান রুমান বলেন, ‘ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’