জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী আলা উদ্দিন (৩৭) এবং শাশুড়ি আমেনা বেগম (৫৫) কে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁদের বাড়ি উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের ছোট দেলিরপাড় গ্রামে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ইসলামপুর থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় জামালপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাঁদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
ইসলামপুর থানা সূত্রে জানা যায়, যৌতুকের দাবিতে গতকাল সোমবার বিকেলে ছোট দেলিরপাড় গ্রামের মৃত জালাল উদ্দীন কাইলে মণ্ডলের ছেলে আলাউদ্দিন তাঁর স্ত্রী মায়া মনি (২৮) কে মারধর করেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, ১৪ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বেলগাছা ইউনিয়নের পূর্ব বেলগাছা ফকির পাড়া গ্রামের ফজলুল করিম মেন্দুর মেয়ে মায়া মনির সঙ্গে বিয়ে হয় আলাউদ্দিনের। তাঁদের সংসারে মাফিন নামে ১০ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। মাঝে মধ্যেই যৌতুক দাবিতে মারধর করা হতো তাঁকে। ঘটনার দিন বিকেলে পারিবারিক কলহ এবং যৌতুকের দাবিতে মায়া মনিকে মারপিট করে আলাল উদ্দিন। গুরুতর আহতাবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।
এ ঘটনার পর নিহত নিহতের ভাই রুহুল আজম বাদী হয়ে রাতে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর (সংশোধন) ১১ (ক) / ৩০ ধারায় মামলা করেন।
এ দিকে সোমবার অভিযুক্ত স্বামী আলাউদ্দিনকে থানায় নিয়ে আসার পর তিনি নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন। তিনি বলেন, `মায়া মনি অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। ঘটনার সময় আমি বাড়িতেই ছিলাম না। অথচ আমার বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দেওয়া হয়েছে।'
ইসলামপুর থানার ওসি (তদন্ত) কবির হোসেন বলেন, 'আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।'
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পুলিশের ইসলামপুর সার্কেলের এ এস পি মো. সুমন মিয়া জানান, ঘাতক স্বামী ও শাশুড়িকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য বের হবে।