নেত্রকোনা প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের সঙ্গে নেত্রকোনার সংযোগ ঘটিয়েছে মদনে বর্ণী নদীর ওপর নির্মিত সেতু। ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় নির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের আগেই অ্যাপ্রোচ সড়কে ধস দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারের অনিয়ম ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই সেতুর অ্যাপ্রোচে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মদন উপজেলা কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল ও নেত্রকোনার মদন উপজেলার সীমান্তে বর্ণী নদীর ওপর সেতু না থাকায় তিনটি উপজেলার মানুষ দুর্ভোগে ছিল। নদীর উত্তরে তাড়াইলের ধলা ইউনিয়নের ধলা গ্রাম ও দক্ষিণে মদনের ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া গ্রাম। এই স্থানে এসে তাড়াইল-মদন সড়ক বিভক্ত হয়েছিল।
সারা বছর ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার হতে হয়েছে তাদের। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২০১৮ সালের ৮ মার্চ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে কিশোরগঞ্জের পিপিএল চ্যালেঞ্জার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কথা ছিল দেড় বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের চার বছরের বেশি সময়েও নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ১৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের বর্ণী নদীর মূল সেতুর কাজ শেষ। তবে সেতুর ওপর ব্যবহৃত পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। সেতুর দুপাশের অ্যাপ্রোচে সড়কের বেশ কিছু অংশ ধসে গেছে। সেতুর সংযোগ সড়কের নিচের মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুটির পশ্চিম পাড়ের অ্যাপ্রোচ পিলার ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। নির্মাণকাজে এমন অনিয়মের কারণে সেতুটির স্থায়ীত্বকাল নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। অ্যাপ্রোচ ব্লক ও পিলার ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারকে বলা হয়েছে এগুলো দ্রুত মেরামত করার জন্য। ঠিকাদার এখনো পুরো বিল পাননি। অ্যাপ্রোচসহ যেসব কাজ এখনো বাকি আছে, সেগুলো মেরামত না করলে বাকি বিল দেওয়া হবে না।’
বক্তব্য জানতে কিশোরগঞ্জের পিপিএল চ্যালেঞ্জার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ম্যা কৃত্তিবাসকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।