শেরপুর ও জামালপুর প্রতিনিধি
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। জানমালের নিরাপত্তা ভোগ করবে। সবাই যার যার ধর্ম পালনের অধিকার ভোগ করবে। আওয়ামী লীগ সরকারের কূটকৌশল ছিল সংখ্যালঘু নির্যাতনের ইস্যু। এখন শেখ হাসিনাও নাই, সংখ্যালঘু নির্যাতনও নাই। সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের পৌর ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক এসব কথা বলেন। খেলাফত মজলিশ শেরপুর জেলা শাখা এ গণসমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে একই দাবিতে জামালপুর শহরের সিংহজানী উচ্চ বালক বিদ্যালয় মাঠে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মামুনুল হক বলেন, ‘শিক্ষা কমিশন গঠন করে এ দেশে সমকামিতা আমদানির পাঁয়তারা করা হচ্ছে। তাই শিক্ষা কমিশনে আলেম-ওলামাদের প্রতিনিধি থাকা দরকার। আজ জেলা শহর থেকে এসব বলা হচ্ছে, পরে ঢাকা থেকে বলা হবে, এরপর শাপলা চত্বরে বলা হবে। এটা আমাদের আবদার না, দাবি। এসব দাবি শোনা না হলে গণভবন, বঙ্গভবন কিছুই থাকবে না।’
খেলাফত মজলিশের মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে ইসলাম ও ইসলামি সভ্যতা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও তাদের এনজিও উপদেষ্টাদের প্রতি সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্ররা বিপ্লব করেছে, কিন্তু ছাত্রদের এই বিপ্লবকে কিছু চিহ্নিত পশ্চিমা গোষ্ঠী এনজিওর সেবাদাস ছিনতাই করার চেষ্টা করছে।’ এ সময় তিনি শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে গঠিত কমিশনকে বাতিল করে নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানান।
এ সময় কোরআন-সুন্নাহবিরোধী যেসব আইন গত সরকার করেছে, সেগুলো সংশোধন করার আহ্বান জানান মাওলানা মামুনুল হক। এ ছাড়া ভারতে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)-কে কটূক্তি করায় সে দেশের হাইকমিশনারকে তলব করে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানাতে বলেন তিনি।
হেফাজতের এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা মনে করেছিলেন ভারত পাশে থাকলে কেউ তাঁকে উৎখাত করতে পারবে না। তবে মানুষ যখন ফুঁসে উঠল, জীবন দিল, হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে শেখ হাসিনার পতন ঠিকই ঘটল। দেশের মানুষের রক্ত ঝরিয়ে কোনো স্বৈরাচারী শাসক ক্ষমতায় থাকতে পারে নাই, হাসিনাও ক্ষমতায় থাকতে পারে নাই। আগামী দিনেও দেশের মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ক্ষমতার মসনদে চিরদিনের মতো থাকার কারও দুরভিসন্ধি পূরণ হবে না।’