শেরপুর প্রতিনিধি
ভালো ফলন ও লাভজনক হওয়ায় ড্রাগন চাষে ঝুঁকছেন শেরপুরের কৃষকেরা। এরই মধ্যে ড্রাগন চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীও হয়েছেন জেলার অনেক কৃষক। ড্রাগন চাষে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।
জানা যায়, দুই দশক আগেও ড্রাগন ফল দেশে আমদানি করা হতো। বাংলাদেশে এই ফলের চাষাবাদ শুরু হয় ২০০৭ সালের দিকে। ২০১২ সালে নকলা-নালিতাবাড়ীর সংসদ সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর নির্দেশে জামালপুর হর্টিকালচার সেন্টার থেকে নকলা উপজেলার ৩২০ জন প্রান্তিক কৃষককে ড্রাগন ফলের কাটিং চারা সরবরাহ করা হয়। ওই কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ বিনা খরচে প্রয়োজনীয় সব উপকরণও বিতরণ করা হয়। এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে নকলা উপজেলার বানের্শ্বদী ইউনিয়নের মোজারবাজার, পোলাদেশী, বাওসা, চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রামপুর, বাছুরআলগা এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ড্রাগনের আবাদ করে লাভবান হন। তাঁদের দেখাদেখি এখন জেলার অন্য উপজেলাগুলোতেও বাণিজ্যিকভাবে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত লাল বারী-১ জাতের ড্রাগনের চাষাবাদ শুরু করেছেন অনেকেই।
অনেকেই খামার শুরু করেছেন। ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের কালাকুড়া গ্রামের মো. আল আমিন হাজী অ্যাগ্রো ফার্ম নামে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছেন ড্রাগন বাগান। তাঁর বাগানে পাঁচ শতাধিক ড্রাগনগাছ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি ড্রাগনের কাটিংকৃত চারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। মো. আল আমিন জানান, পরিবারের জন্য বিষমুক্ত তাজা ফল নিতে অনেকেই শহর থেকে সরাসরি বাগানে আসেন। ড্রাগনের সঙ্গে সবাই পরিচিত না হলেও স্থানীয়ভাবে এর চাহিদা রয়েছে। সুস্বাদু ও লোভনীয় এই ফল স্বাদ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। ড্রাগন ফলের অনেক ভেষজ ও ঔষধি গুণ রয়েছে। ড্রাগন ফল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি হৃদযন্ত্র ভালো রাখতেও সহায়ক।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোহিত কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদেশি ফল ড্রাগন ভিটামিন সি, মিনারেল ও আঁশসমৃদ্ধ। কিছুদিন আগেও শেরপুরে এটি সীমিত আকারে চাষ হয়েছে। বর্তমানে জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই ব্যাপকভাবে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে। উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় এতে বেশ লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। আধুনিক ও পুষ্টিকর এই ফলের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরাও ঝুঁকছে। আগামী কয়েক বছরে জেলার অন্যান্য ফলের মধ্যে ড্রাগনও বড় একটা স্থান দখল করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।