কামরুল হাসান তুষার ঢাকার মিরপুর প্রাইম ইউনিভার্সিটিতে ইলেকট্রনিকস এন্ড যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শেষে একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কিন্তু করোনার শুরুতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে মিশ্র ফল চাষ শুরু করে এখন তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।
ভাইদের পরামর্শে ৪৫ বিঘা জমিতে মাল্টা, বরই ও পেয়ারার একটি মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তোলেন তুষার। এর নাম দেন রাইয়্যান এগ্রো ফার্ম। বাগান শুরুর বয়স এখনো দুবছর না হলেও প্রথম বছরেই বল সুন্দরী বরই বিক্রি করে সাফল্য পেয়েছেন তুষার। সেখান থেকেই আশার আলো দেখতে পান তুষার। ১২ বিঘা জমিতে বরই চাষ করে প্রায় ২০ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছেন তিনি।
এ ছাড়া তিনি মাল্টা ও পেয়ারা চাষ করছেন। তার বাগান থেকে চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৩শ ক্যারেট মাল্টা ও ৪শ মণ পেয়ারা বিক্রি করেছেন। মাল্টা বিক্রি প্রায় শেষের দিকে। রয়েছে শুধু পেয়ারা।
সরেজমিনে তুষারের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সবুজ বেষ্টনীতে সৌন্দর্যে ভরপুর এক বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশ। বাগানে দেখা যায় কিছু জমিতে মাল্টা ও পেয়ারার গাছ বড় হয়ে গেছে। আবার কিছু জমিতে গাছ ছোট রয়েছে। এক দেড় ফিট লম্বা পেয়ারা গাছে হাফ কেজি থেকে ৭ শ’ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের মিষ্টি পেয়ারা ধরে আছে।
তুষার বলেন, বাগান তৈরি করে প্রথম বছরেই আশার আলো দেখতে পেয়েছি। কেউ যদি সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে পারে অবশ্যই সফল হবে। শ্রমিকের সঙ্গে নিজেকেও শ্রমিক হতে হবে। আমার বাগানের মাল্টা ও পেয়ারার এলাকায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ফোনে অর্ডার আসে। সে অনুযায়ী ডেলিভারি দেওয়া হয়।
বদলগাছী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী মাটির গুণগত মান ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় সেখানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাল্টা চাষাবাদ। বদলগাছী উপজেলায় ৫৯ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় ৫টি বাগান গড়ে উঠেছে। এ বছর মাল্টার বাম্পার ফলনও হয়েছে। মাল্টার চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের অনেক কৃষক মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। মাল্টার আবাদ বাড়াতে সব রকমের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। যাতে এই এলাকার কৃষক অল্প খরচে স্বল্প সময়ের মধ্যে লাভবান হতে পারেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী বলেন, আমরা সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। মাল্টা, কমলা ও লেবু জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। বিদেশি ফল পরিহার করে দেশীয় ফলে নির্ভর হতে হবে আমাদের।