বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ভ্রাম্যমান আদালতের সিলগালা করা গুদাম থেকে চাল চুরির মূলহোতা যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেন। চাল চুরির ঘটনায় করা মামলায় শাহাদতের নাম না থাকলেও গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের জবানবন্দীতে উঠে এসেছে তাঁর নাম। শাহাদত হোসেন উপজেলা যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য।
গতকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বগুড়ার সারিকান্দি আমলি আদালতে জবানবন্দী দেন গ্রেপ্তারকৃত তিনজন।
এর আগে ওই দিন ভোরে চাল চুরির সঙ্গে জড়িত ট্রাক চালক বেলাল হোসেন (৩৫), সহকারী রুসাত (২৮) ও ভটভটি চালক রায়হান কবিরকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে সারিকান্দি থানা-পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে গুদাম থেকে চুরি করা চাল বহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক।
জবানবন্দীতে যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেনের নাম উঠে আসে। গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, শাহাদাতের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতায় তাঁরই গুদামে ভ্রাম্যমান আদালতের সিলগালা করে রাখা এক হাজার ১৩০ বস্তা চালের মধ্যে থেকে এক হাজার ১২৪ বস্তা চাল রাতে আধারে চুরি করেন তাঁরা। এরপর ট্রাক ও ভটভটিযোগে চালগুলো শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল নাঈম উপজেলার কালিতলা বাগবেড় এলাকায় বগুড়া জেলা প্রশাসনের শাহাদত হোসেন নামে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার গুদামে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অবৈধভাবে মজুত করা সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১ হাজার ১৩০ বস্তা চাল ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জব্দ করেন। পরে চালসহ গুদাম সিলগালা করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের হেফাজতে দেওয়া হয়।
এ দিকে সিলগালা করা গুদাম থেকে চাল সরানোর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি গত ২২ ডিসেম্বর বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সিলগালা খুলে মাত্র ৬ বস্তা চাল পড়ে থাকতে দেখেন। বাকি ১ হাজার ১২৪ বস্তাই উধাও!
এরপর ওই দিন রাতেই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে থানায় মামলা করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আতিকুর রহমান। মামলা তদন্তকালে পুলিশ শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোর রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চুরি করা চাল বহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাকটি জব্দ করে।
মামলার তদন্তকারীকারী সারিয়াকান্দি থানার উপপরিদর্শক (এস আই) নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘চাল চুরির মুল হোতা শাদাদত হোসেন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। গ্রেপ্তার তিনজন আদালত স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেওয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’