চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে একটি আমবাগানে কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিস্ফোরণে অর্থের অভাবে চোখ হারাতে বসেছে স্কুলছাত্র রিমন ওরফে ইমন (১১)। সে শিবগঞ্জ পৌর চতুরপুর মহল্লার আনারুল ইসলামের ছেলে ও আলীডাঙা জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ইমন।
আজ বুধবার বিকেলে শিবগঞ্জ পৌর চতুরপুর মহল্লায় ইমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়-একটি কক্ষে বিছানায় শুয়ে আছে ইমন। পাশেই বসা মা শিউলি বেগম। ইমনের এখন পড়ার টেবিলে থাকার কথা। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা তাকে সবকিছু থেকে দূরে রেখেছে।
গত ১৮ মার্চ থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে ইমন ও তাঁর ছোট ভাই ইকবাল শিবগঞ্জ স্টেডিয়াম সংলগ্ন পশ্চিম দিকের আমবাগানে গাছের পাতা ও ডালপালা কুড়াতে যায়। এ সময় একটি পরিত্যক্ত ককটেল দেখে পা দিয়ে লাথি মারলে সেটি বিস্ফোরিত হয়। এতে রিমনের বাম চোখসহ শরীরের বিভিন্নস্থান জখম হয়।
স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহত ইকবালকে দেওয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসা। কিন্তু ইমনের অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। টানা পাঁচ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে আসে সে।
ইমনের মা শিউলি বেগম জানান, ছেলে চিকিৎসার জন্য বাড়ির চারটি ছাগল বিক্রি করা হয়। একই সঙ্গে আশপাশের লোকজনদের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে ছেলের চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসকেরা বলেছেন-এক মাস পর আবার ছেলেকে দেখিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
ইমনের মা আরও জানান, তিন মাস পর ছেলের অপারেশন করাতে হবে। স্বামী একজন ভ্যান চালক। মাঝে মধ্যে তাঁত শিল্পের কাজ করে কোনো মতে সংসার চলে তাঁদের। কিন্তু ছেলে চিকিৎসা করাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন স্কুলছাত্রের এই অসহায় মা-বাবা।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আজিজুল ইসলাম জানান, যদি পরিবার সহযোগিতা চান, তাহলে সাধ্যমতো সহায়তা করা হবে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ জানান, পরিত্যক্ত ককটেল বিস্ফোরণে শিশু আহতের ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।