নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ করে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত লুৎফুল হাবিব রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আর ঘটনার চার দিন পর আজ শুক্রবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রুবেলকে শোকজ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, ১৫ এপ্রিল জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশার মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা, মারধর ও অপহরণের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি সুমনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আপনার সম্পৃক্ততার কথা জানা গেছে, যা দলীয় আচরণবিধি পরিপন্থীর শামিল। এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না—তা আগামী তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী আজ (শুক্রবার) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে এসে ফেরার পথে লুৎফুল হাবিব রুবেলকে ফোন করে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমানসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আজ বিকেলে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশসহ একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ লুৎফুল হাবিব রুবেলকে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার পর রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ-সংক্রান্ত লিখিত নোটিশ দেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রয়োজনে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই সারা দেশের জন্য। কেউ যাতে ভবিষ্যতে আমার নাম ভাঙিয়ে সিংড়ায় কোনো অবৈধ সুবিধা না নিতে পারে। দলকে বিক্রি না করতে পারে এবং সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার না করতে পারে। সিংড়ার মাটিতে কোনো দুর্বৃত্তদের প্রশ্রয় হবে না।’
এর আগে গত সোমবার নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করে অপহরণ করে লুৎফুল হাবিব রুবেলের অনুসারীরা। পরে সিংড়ার সাঐল গ্রাম থেকে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মজিবর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপরই হামলার ঘটনার সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিবের নাম উঠে আসে।