সিংড়ায় আপন দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গতকাল শুক্রবার বড় ভাই বুদ্দু ওরফে বুদা ছোট ভাই আফাজ আলী ওরফে আপালকে লক্ষ্য করে গুলি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের বিয়াশ মাবিয়ার মোড় বাজার এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে এ ঘটনা ঘটে। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন আফাজ আলী।
ঘটনার পর বড় ভাই বুদ্দু ওরফে বুদা পলাতক। দুই ভাই উপজেলার বিয়াশ চকপাড়ার মৃত রুস্তম আলীর ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জমিজমা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছে। গত ২৬ ডিসেম্বর স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে দুই ভাই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। শুক্রবার সকাল ৭টায় বিয়াস মাবিয়ার মোড় বাজারে ছোট ভাই আপাল চা পান করতে যান। এ সময় বড় ভাই বুদাসহ অপরিচিত চার থেকে পাঁচজনের একটি দল আপালকে টানাহেঁচড়া করতে থাকে। আপালের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে আপালকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যান বুদা ও তাঁর দলবল। আপাল অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। গুলির শব্দে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তারেক হোসেন দুলাল ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল রাজাক ফকির বলেন, আমরা ওই সময়ে স্টলে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখি অপরিচিত চার থেকে পাঁচজন লোক নিয়ে বুদা তাঁর ভাইকে টানাহেঁচড়া করছেন। এলাকাবাসী এগিয়ে যেতেই ছোট ভাই আপালকে উদ্দেশ করে গুলি বর্ষণ করে পালিয়ে যান বড় ভাই বুদা।
ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএম আবুল কালাম বলেন, ‘দুই ভাই খারাপ প্রকৃতির লোক। জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধে এই গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।’
ভুক্তভোগী আফাজ আলী আপাল বলেন, ‘গুলির ঘটনার আগে তাঁর বাড়ি ঘর লুট করা হয়। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
তবে আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ গুলিবর্ষণের কোনো আলামত পায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত বুদ্দু ওরফে বুদার বাড়ি তল্লাশি করে তাঁকে পায়নি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’