নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বোরো ধানের খেতে সেচের পানি না পেয়ে বিষপান করা সাঁওতাল কৃষক মুকুল সরেনের (৩৫) সঙ্গে কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ। সোমবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গিয়ে মুকুলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মুকুল ডিসিকে জানান, পানি না পাওয়ার অভিমানে তিনি বিষপান করেন। তিনি পানি নিয়ে এই সমস্যার সমাধান চান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (গোপনীয় শাখা) মো. শামসুল ইসলাম এবং পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার। জেলা প্রশাসক হাসপাতালে মুকুলের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘পানি না পেয়ে বিষপান, অভিনাথ-রবির পর এবার মুকুল’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি নজরে আসলে জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে তিনি মুকুলের সঙ্গে কথা বলতে যান বলে জানান পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার।
রাতে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ মুকুল সরেনকে দেখতে গিয়ে জানান, তাঁর চিকিৎসার সমস্ত ব্যয় জেলা প্রশাসন বহন করবে। মুকুল শারীরীকভাবে সুস্থ থাকায় মঙ্গলবারই জেলা প্রশাসক কৃষক মুকুলকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকেছেন। সেখানে তাঁর সমস্যার কথা শুনে সমাধান করে দেওয়া হবে বলেও মুকুলকে আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
মুকুল সরেনের বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম গোপাল সরেন। বর্ষাপাড়া গ্রামের পাশের গ্রামটি নিমঘটু। গত বছরের মার্চে বোরো ধানের জমিতে পানি না পেয়ে এই নিমঘটু গ্রামের কৃষক অভিনাথ মারান্ডি ও তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি বিষপান করেন। এতে দুজনেরই মৃত্যু হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
মারা যাওয়া কৃষক অভিনাথ ও রবি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) যে গভীর নলকূপের আওতায় জমি চাষ করতেন, সেই একই নলকূপের কৃষক মুকুল সরেন। অভিনাথ ও রবির মৃত্যুর পর বিভিন্নপক্ষ ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে মুকুল বিষপানের একদিন পর সোমবার থেকে কথা বলতে পারছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানিয়েছেন, বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি না দেওয়ার কারণেই তিনি বিষপান করেছেন।