নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে খেয়াঘাটের ইজারাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ইজারাদার মো. আলমগীর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। গত সোমবার এই অভিযোগ করা হয়।
আলমগীর গোদাগাড়ী উপজেলার বড়গাছি পেটাও বিদিরপুর ফেরিঘাটের (খেয়াঘাট) ইজারাদার। বাংলা ১৪৩১ সনের জন্য তিনি ৯৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকায় খেয়াঘাটটি ইজারা নেন। এই খেয়াঘাট হয়ে পদ্মা নদীর ওপারের চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বাসিন্দারা পারাপার হন।
আলমগীর তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, জেলা পরিষদের নির্ধারিত টোল চার্ট অনুযায়ী তাঁরা টোল আদায় করে আসছেন। এত দিন কোনো সমস্যা না হলেও সম্প্রতি খেয়াঘাটের টোল থেকে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি চাঁদা দাবি করছেন।
অভিযোগে ইজারাদার মো. আলমগীর চামারবাড়িয়া গ্রামের ইমাম হোসেন, দিয়াড় মানিকচকের আব্দুল্লাহিল কাফি, কানাপাড়ার মানসুর রহমান, নতুন গ্রামের মাহাবুবুর রহমান মিঠুন, থানাপাড়ার গোলাম মোর্ত্তজা ও চর নওশেরা গ্রামের মো. ইমনের নাম উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে ইজারাদারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘাটের ইজারা বাতিলেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায়ের মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। টোল আদায় কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য এই অভিযোগে জেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তর থেকে প্রতিনিধি পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়।
ইজারাদার মো. আলমগীর বলেন, ‘আগে এ ধরনের চাঁদা দাবির কোনো ঘটনা ছিল না। কিছুদিন ধরে খেয়াঘাটের টোল থেকে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে ঘাট বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমাম হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আমরা কেউ চাঁদা দাবি করিনি। এই খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হয়। এর প্রতিবাদ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে।’
ইমাম হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা কেউ চাঁদা চাইনি। ঘাটের লোকজন আওয়ামী লীগ করেন। যাঁরা এখন ভাবছেন ভবিষ্যতে তাঁরা ক্ষমতায় আসবেন, তাঁরা চাঁদা চাচ্ছেন। আর বলা হচ্ছে আমাদের কথা।’
খেয়াঘাটটি ইজারা দেয় রাজশাহী জেলা পরিষদ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘাটে আমি বড় আকারে টোল চার্ট সাইনবোর্ড লাগিয়ে এসেছি। অতিরিক্ত টোল আদায়ের সুযোগ নেই। ইজারাদার অভিযোগ করেছেন যে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। এটা তো ফৌজদারি অপরাধ। তিনি থানায় অভিযোগ করতে পারেন। তাঁকে এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’