রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় এ পদ্ধতি বহাল রাখার প্রতিবাদে আজ বুধবার এ কর্মসূচিতে অংশ নেন তাঁরা। ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘সাকিব-আঞ্জুম-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সাধারণ সুবিধাভোগী মানুষের কাতারে নিয়ে আসতে কোটা সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বেতন পান। এত টাকা বেতনের লোকজন কীভাবে সুবিধাবঞ্চিত হন? কীভাবে তাঁরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আওতায় আসেন?
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মো. মেশকাত চৌধুরী বলেন, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। এরপরও পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে আমাদের আবার রাজপথে দাঁড়াতে হবে, এটা খুবই দুঃখজনক। এ কোটা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ উৎখাত না করা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রশাসন মনে করতে পারে—শিক্ষার্থীরা কত দিন রাজপথে থাকবে, কত দিন আর আন্দোলন করবে, একটা সময় আন্দোলন করতে করতে ওরা নিজেরাই বাড়ি ফিরে যাবে। তাহলে আমরা আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই’ ৫২, ’ ৬৯, ’ ৭১, ’ ৯০ এবং সর্বশেষ’ ২৪-এর আন্দোলনের কথা। শিক্ষার্থীরা তাঁদের নৈতিক দাবি আদায় না করে কখনো রাজপথ ছাড়ে না, ছাড়বেও না।’
ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বেশ কিছু দিন থেকেই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি, আমরণ অনশন, বিক্ষোভ, মানববন্ধন, লাল কার্ড প্রদর্শন ও প্রতীকী কবরের মতো কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে ২০ সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। তবে ওই কমিটি শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।