ধামুইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর ধামইরহাটে এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। গত সপ্তাহের শুরুতে কাঁচামালের যেই দাম ছিল, সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই অনেক পণ্যের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অন্তত ২০ টাকা বেড়েছে প্রতিটি পণ্যেই। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে গিয়ে ‘মাথায় হাত’ পড়েছে স্থানীয় নিম্ন আয়ের মানুষদের।
আজ রোববার দুপুরে উপজেলার সাপ্তাহিক হাট ধামইরহাটে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। উপজেলার একমাত্র বড় সাপ্তাহিক হাট বসে ধামুইরহাট বাজারে। এ দিন সকালে কাঁচা বাজার ও বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসায়ীরা এসে অস্থায়ী দোকান বসান। কেনা-বেচা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। হাটবাজারে কাঁচা তরকারি ও সবজি কিনতে গিয়ে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তসহ কর্মহীন মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। আয়ের চাইতে ব্যয় বেশি হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে তাঁদের। নিত্যপণ্যের দাম শুনে যেন তাদের মাথায় হাত পড়েছে। এ কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইছেন ক্রেতারা।
বাজারে কাচা শাকসবজির দাম সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আদা ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৮০ থেকে ৪৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৫ টাকা যা গত সপ্তাহের চাইতে কেজি প্রতি ৫৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও লবণ ১৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা, জিরা মসলা ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা, মুরগির ডিম ৪২ টাকা থেকে ৪৫ টাকা, হাঁসের ডিম ৫৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা। আগামী সপ্তাহ থেকে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মুদি ব্যবসায়ীরা জানান।
অন্যদিকে বাজারে কাটারি ভোগ ও জিরা চাল ৭০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৬৫ টাকা এবং দেশি মুরগির দাম ৫৫০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৮০ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা। তবে পোলট্রি মুরগি ২২০ টাকা থেকে কমে ২০০ টাকায় বিক্রয় হতে দেখা গেছে।
ধামুইরহাট ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মাহানুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বছর চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের চাষাবাদ কম হয়েছে। ভারতীয় এলসি বন্ধ থাকায় পাইকারি বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আগামী কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পেঁয়াজ, আদা, রসুনসহ শুকনা মরিচ আমদানি করা না হলে এর দাম আরও বাড়বে।’
আলমপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চকভাইকা এলাকার সবজি ব্যবসায়ী বিপ্লব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অতি খরার কারণে সবজির ফলন অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এ কারণে চাহিদার সঙ্গে জোগান কম হওয়াতে পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজার মনিটরিংয়ের জন্য আমাদের টিম নিয়মিত কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’