নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া নারী চিকিৎসক শাকিরা তাসনিম দোলার (২৬) সন্ধান পায়নি পুলিশ। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে। একদিন পরও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারেনি। তবে অপহরণের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য ডেন্টাল বিডিএস শেষ করা চিকিৎসক শাকিরা তাসনিম দোলা নগরের চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় নিজের বাসায় পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। গতকাল সোমবার ভোরে এই বাসা থেকেই তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরিবারের ভাষ্য, সোমবার ফজরের আজানের পর শাকিরার বাবা আবু তাহের খুরশিদ বকুল নামাজের জন্য মসজিদে যেতে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি পাঁচতলা বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যান। তিনি বাড়ি থেকে বের হলেই অপহরণকারীরা তাকে জিম্মি করে চাবি কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ির দোতলায় উঠে তারা চিকিৎসক শাকিরাকে টেনে নামাতে শুরু করে।
এ সময় বাধা দিতে গেলে শাকিরার মা রেহেনা পারভীন ওরফে শিউলিকে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। তারা মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর বিছানায় ফেলে গলা চেপে ধরে। তিনি পড়ে গেলে বাবা-মেয়েকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
গাড়িতে তোলার পরই মুখ বেঁধে ইনজেকশন পুশ করা হয়। বকুলের চেতনা ফিরে এলে তাঁকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় মহাসড়কের পাশে নামিয়ে দেওয়া হয়। আর শাকিরাকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে বকুল সলঙ্গা থানা-পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে ফিরে আসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তুলে নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। মাইক্রোবাসের রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানা গেছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকের বাবা বকুল বাদী হয়ে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেছেন।
এ মামলায় আসামি হিসেবে তানভীর খান তাজ রওশন আলম নামের এক যুবকের নাম রয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে কয়েকজনকে। তানভীর খানের বাড়ি পাবনা। তিনি রাজশাহীতে থাকেন। তানভীর খান ওই চিকিৎসককে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, ‘তানভীর খান একটা টাউট লোক। সে এই অপহরণকাণ্ডের মূল হোতা। তার অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে। ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। একটা রেজাল্ট আসবে।’