হোম > সারা দেশ > পাবনা

পাখিপ্রেমীর ভালোবাসায় মুক্ত হয়ে আকাশে ডানা মেলল ৪০ বক

পাবনা ও চাটমোহর প্রতিনিধি

ফাঁদ দিয়ে বক শিকার করে বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই পাখি শিকারি। এ সময় এক পাখিপ্রেমীর নজরে পড়ল বিষয়টি। শিকারিদের পথ আটকে বক ধরার ক্ষতিকর প্রভাব ও পাখি শিকারের আইন সম্পর্কে বোঝালেন তিনি। এতেই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ফাঁদ পেতে ধরা ৪০টি বক মুক্ত করে দেন ওই দুই ব্যক্তি। এতেই বকগুলো ডানা ঝাপটে উড়ে যায় মুক্ত আকাশে। পায় নতুন জীবন। 

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ধানকুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

এই পেশাদার দুই পাখি শিকারি হলেন চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী (৩৮) এবং নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামের অসিম প্রামাণিক (৩৬)। 

আর পাখিপ্রেমী ব্যক্তিটি হলেন দৈনিক কালবেলা ও দ্য বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকার চাটমোহর উপজেলা প্রতিনিধি ইকবাল কবীর রঞ্জু। তিনি মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। 

মঙ্গলবার সকাল ৯টা। কলেজে যাচ্ছিলেন ইকবাল কবীর রঞ্জু। চাটমোহর-ছাইকোলা সড়কের ধানকুনিয়া এলাকায় পৌঁছালে দুজন পাখি শিকারিকে দেখতে পান। রাস্তার পাশে দাঁড় করানো তাঁদের ভ্যানগাড়িতে বক ধরার সরঞ্জাম ও মুখ বাঁধা দুটি পাটের বস্তার ভেতরে নড়াচড়া দেখেই সন্দেহ হয়।

তখন তিনি শিকারিদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানান, গত কয়েক দিন ধরে চাটমোহরের বিভিন্ন বিলে ফাঁদ পেতে বক ধরেছেন। মঙ্গলবার ভোরে বক ধরতে আসেন চাটমোহরের বোয়াইলমারী বিলে। ফাঁদ পেতে ভোর থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ধরে ফেলেন ৪০টি বক। ক্রেতা পেলে কিছু বক বিক্রি করেন, কিছু বক নিজেরা খান। প্রতিটি বক ১০০ টাকা বা তার কিছু কম-বেশি দামে বিক্রি করেন তাঁরা। 

এরপর বক ধরার ক্ষতিকর প্রভাব ও পাখি শিকারের আইন সম্পর্কে তাঁদের বোঝাতে সক্ষম হন রঞ্জু। শিকারিরা আর বক ধরবেন না বলে জানান। একপর্যায়ে নিজেদের শিকার করা দুটি বস্তার মুখ খুলে ৪০টি বক উড়িয়ে দেন মুক্ত আকাশে। মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায় বকগুলো। 

সাংবাদিক ও শিক্ষক ইকবাল কবির রঞ্জু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই পাখির প্রতি আলাদা ভালোবাসা কাজ করে। তাই যেখানেই পাখি শিকার করতে দেখি, খারাপ লাগে। শিকারিদের নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি। দুজন পাখি শিকারি খুব সহজেই আমার কথা বুঝতে পেরে বকগুলো মুক্ত করে দিয়েছেন। এটাই মনের শান্তি।’ 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চাটমোহরে কর্মরত অতিরিক্ত উপজেলা বন কর্মকর্তা এজাহিদ হোসেন বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে বন্য পশু-পাখি শিকার করা, আটকে রাখা আইনত অপরাধ। আমরা এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। উপজেলা পরিষদের সভায়ও এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।’ 

তিনি আরও বলেন, কেউ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করলে, বন্যপ্রাণী আটক করলে বা বিক্রি করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ বন্য পশু-পাখি শিকার, আটক, ক্রয়-বিক্রয় করলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে সচেতন মহলের সহযোগিতা এবং বক বা খাওয়ার যোগ্য অন্য বন্য পাখি বা প্রাণী শিকারিদের কাছ থেকে না কিনতে আহ্বান জানান এই বন কর্মকর্তা। 

উল্লেখ্য, চাটমোহরের বিলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বক ও অন্যান্য পাখির দেখা মিলছে। এই সুযোগে আইন অমান্য করে অসাধু শিকারিরা বিভিন্ন বিল থেকে প্রায়ই ফাঁদ পেতে বকসহ অন্যান্য পাখি ধরে বিক্রি করছে।

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার শেষকৃত্যে অংশ নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রদ্যুৎ কুমার

রাবিতে পদত্যাগী ছয় ডিনের কাজের দায়িত্বে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যদ্বয়

রাবিতে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে: ডিনদের পদত্যাগ ইস্যুতে ছাত্রদল

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

নিরাপত্তা শঙ্কায় রাবি শিক্ষকের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

ওসমান হাদি ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন: তারেক রহমান

রাবির ৬ ডিনের পদত্যাগ দাবি: ভিসি, প্রো-ভিসির দপ্তরে তালার পর সভা, সিদ্ধান্ত রাতে

শিশু সাজিদের পরিবারকে অনুদান দিল জামায়াত

বগুড়ায় ট্রাকচাপায় কলেজছাত্র নিহত