পাবনা ও সাঁথিয়া প্রতিনিধি
চরমপন্থী জীবন থেকে ফিরে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন বাকুল মিয়া (৪৫)। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করল দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাত নয়টার দিকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি ইউনিয়নের রাউতি উত্তরপাড়া স্কুলের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত বাকুল মিয়া উপজেলার রাউতি গ্রামের মো. রওশন আলীর ছেলে। তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
এ ঘটনায় বাকুলের ভাতিজা আলেপ হোসেনকেও (২৫) কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আলেপ একই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
নিহত বাকুলের ছেলে রাসেল মিয়া বলেন, ‘চরমপন্থী জীবন থেকে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন আমার আব্বা। তারপর গ্রামে থেকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। রোববার রাতে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তিনি। এ সময় একই গ্রামের জালাল মাস্টার এসে তাকে ধান নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলে। তখন আমার চাচাতো ভাই আলেপকে নিয়ে আমার আব্বা ঘোড়ার গাড়িতে ধান নিয়ে জলিল মাস্টারের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রাউতি উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে রাস্তার ওপর পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত আব্বাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে।’
এদিকে এ সময় বাকুল মিয়ার সঙ্গে থাকা ভাতিজা আলেপ বাধা দিতে গেলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আহত আলেপকে উদ্ধার করে সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পুলিশকে জানায়।
সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। একজন আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জেনেছি। কারা, কী কারণে তাকে হত্যা করেছে তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিহত বাকুল আগে চরমপন্থী দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে তিনি আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল বিকেলে পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের আইজির কাছে পাবনাসহ ১৪ জেলার ৫৯৫ জন চরমপন্থী নেতা ও সদস্য আত্মসমর্পণ করেন।