বগুড়ার প্রধান কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখলেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ঢাকার তুলনায় এখানে বিশেষ করে কাঁচাবাজার ঘুরে তাঁর মনে হয়েছে, যেন শায়েস্তা খাঁর আমলে ফিরে গেছেন! পণ্যের দামে এত পার্থক্যের কারণে অবশ্য তিনি কৃষি বিপণনব্যবস্থার দুর্বলতাকেই দুষছেন।
আজ রোববার দুপুরে বগুড়া শহরের রাজাবাজারে সচেতনতামূলক বাজার তদারক করতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সফিকুজ্জামান।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘বগুড়ার কাঁচাবাজার পরিদর্শন করে আমার মনে হয়েছে, যেন শায়েস্তা খাঁর আমল! এখানে লেবু বিক্রি হচ্ছে এক টাকা করে, অথচ ঢাকায় কোনো কোনো সময় এক হালি লেবুর দাম ৬০ টাকা। ভেন্ডি (ঢ্যাঁড়স) এবং পটোল মাত্র ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা নাকি কৃষকদের কাছ থেকে ১৩ থেকে ১৬ টাকা দরে কিনেছে। অথচ গতকালও ঢাকার বাজারে পটোল বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের বিপণনব্যবস্থায় ত্রুটি আছে।’
তিনি বলেন, ‘বগুড়ার মধ্যে রাজাবাজার একটি বড় মার্কেট। সেখানে যদি ২০ টাকায় পটোল বিক্রি হয়, তাহলে কেন ঢাকার মানুষ ৮০ টাকায় তা কিনবে? কৃষি বিপণন অধিদপ্তরকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা দরকার। কৃষকেরা যেন সরাসরি মার্কেটে তাঁদের পণ্য নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা দরকার।’
ঢাকার সঙ্গে বগুড়ায় দামের এত পার্থক্যকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, ‘বগুড়ার বাজার থেকে ঢাকায় হয়তো তার দাম শতকরা ৫০ ভাগ বেশি হতে পারে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ ভাগ বেশি দামে তা বিক্রি হচ্ছে। এটা একেবারেই অযৌক্তিক। এখানে মধ্যস্বত্বভোগী, আড়তদার, ফড়িয়া ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িতরা এই কাজ করে।’
তবে আলুর দামে তেমন পার্থক্য দেখেননি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বগুড়া আলুর জন্য বিখ্যাত, অথচ সেখানেই ৫২ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজার কমিটিকে উদ্যোগী হতে হবে; পাইকারির চেয়ে খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দামে বিক্রি বন্ধ করতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে অভিযান চালানো হবে।’
বগুড়া শহরের রাজাবাজারে সচেতনতামূলক বাজার তদারকির সময় বেশ কয়েকটি দোকান পরিদর্শন করে সেখানে প্যাকেটজাত পণ্যের বিএসটিআই সনদ না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন ভোক্তা অধিকারের ডিজি।
এ ছাড়া একটি হলুদ ও মরিচ ভাঙার কল পরিদর্শন করে সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করে দেন। পরিদর্শনকালে তিনি বিএসটিআই, ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান যিনি। বগুড়ায় ডিমের বাজার নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানান।