প্রতিনিধি, নলডাঙ্গা (নাটোর)
প্রায় দুই দশক আগে পরিবার তাঁকে ত্যাজ্য করে। এরপর হাত পেতে, হিজড়া সম্প্রদায়ের মিশে নানাভাবে কোনোরকম পেটে ভাতে চলতো। গত মঙ্গলবার শোয়ার ঘর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, আত্মহত্যা করেছেন ববিতা। বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। শেষ আশ্রয়টাও দিল না তাঁর স্বজনরা। অবশেষে মৃত্যুর দুই দিন পর প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি গোরস্থানে দাফন করা হয় তাঁকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হওয়ায় পরিবারের নানা বঞ্চনায় শিকার হয়ে বাড়ি ছাড়েন ববিতা। ১৬ বছর ধরে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার রেল কলোনিতে বসবাস শুরু করেন। গত ১৩ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাতের যে কোনো এক সময় তিনি বিষ পানে আত্মহত্যা করেন। গতকাল বুধবার বিকেলে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে আত্রাই থানা পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের পর দাফন নিয়ে বিপাকে পড়ে পুলিশ। রেল কলোনি সংলগ্ন ভর তেঁতুলিয়া কবরস্থানের সভাপতি সাফ জানিয়ে দেন তাঁকে সেখানে দাফন করতে দেওয়া হবে না। নিজ গ্রাম নলডাঙ্গার খাজুরার স্বজনরাও মরদেহ নিতে রাজি না। অবশেষে মৃত্যুর দুই দিন পর তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আত্রাই সরকারি কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
আত্রাই থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ববিতা ১৩ জুলাই রাতে কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তা জানা যায়নি। তাঁর বাড়ি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা গ্রামে। তাঁর বাবা, মা, ভাই-বোন কেউ বেঁচে নেই। অন্য আত্মীয়স্বজনও মরদেহ নিতে রাজি নয়। বাধ্য হয়ে সরকারি গোরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁর আত্মহত্যার ব্যাপারে আত্রাই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।