সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী)
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) সেবা না পেয়েও চারঘাটের গ্রাহকদের প্রতি মাসেই গুনতে হচ্ছে টেলিফোন বিল। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সেবা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরসহ ব্যবহারকারীরা।
বিটিসিএল চারঘাট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের (বিটিটিবি) চারঘাট শাখার অফিস ১৯৮১ সালে উদ্বোধন করা হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই বিটিটিবিকে পুনর্গঠন করে এর নাম দেওয়া হয় বিটিসিএল। চারঘাট উপজেলায় তিন শ টেলিফোন সংযোগের ধারণক্ষমতা থাকলেও তখন সর্বোচ্চ গ্রাহকসংখ্যা হয় ২৫০। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬। যার মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সবগুলো দপ্তর ও ব্যক্তি মালিকানা প্রায় ৫০টি টেলিফোন সংযোগ বর্তমানে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও নিয়মিত বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের।
চারঘাট সদরের চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জরুরি প্রয়োজনে টেলিফোন সংযোগ নিয়েছি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমার বাসায় টেলিফোনের সেবা নেই। প্রতি মাসেই বিল আসছে, যা পরিশোধ করে যাচ্ছি। সেবা সচ্ছল করে দেওয়া জন্য বারবার বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।’
চারঘাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার অফিস থেকে ট্রেনিং সহ বিভিন্ন কাজে সুবিধাভোগীদের বারবার ফোন করতে হয়। মোবাইলে যা অনেক ব্যয়বহুল। এ দিকে এক বছরের বেশি সময় ধরে টেলিফোনের সেবা নেই কিন্তু বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিটিসিএল অফিসে আবেদন করেছি। কিন্তু এর সুরাহা হয়নি।’
এ দিকে যাদের টেলিফোনে সংযোগ রয়েছে কিন্তু সেবা পাচ্ছেন না, তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সংশ্লিষ্ট মহলকে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি। অথচ মাসের পর মাস বিল আসছে। ফলে গ্রাহকেরা সেবা না পেয়েও বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করছেন বলে অভিযোগ করেন গ্রাহকেরা। এ ছাড়া অধিকাংশ গ্রাহক এখন আর বিটিসিএল এ যোগাযোগ করেন না বলে জানা যায়।
চারঘাট বিটিসিএল অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চারঘাট অফিসে একজন অফিস স্টাফ রয়েছেন। তিনি লাইনম্যান পদে নিয়োজিত। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লাইনম্যান আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, সড়ক উন্নয়নের জন্য কয়েকটি স্থানে বিটিসিএলের তার কাটা পড়েছে। আবার অনেক জায়গায় তার চুরি হয়ে গেছে। এতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অর্ধশতাধিক গ্রাহক টেলিফোন সেবা বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিটিসিএলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেওয়ান শওকত বলেন, অচল সংযোগগুলোর ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন করার কোনো আবেদন করেনি। আবেদন করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতিনিয়ত তার চুরি ও রাস্তার উন্নয়নকাজের জন্য সংযোগ আপাতত বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ সচল হবে এটাও বলা যাচ্ছে না।