হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

অস্তিত্ব হারাতে বসেছে খরস্রোতা আত্রাই নদী

প্রতিনিধি

নওগাঁ: শুষ্ক মৌসুমে ভারতের অভ্যন্তরে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে এক সময়ের খরস্রোতা আত্রাই নদী। উত্তাল নদীটি এখন শুধু নামেই। তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পরিণত হয়েছে মরা খালে। গত মঙ্গলবার থেকে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাঁচবারের মত শুকিয়ে গেল নদীটি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আত্রাই নদীর উৎসের অববাহিকায় বৃষ্টিপাত কম হওয়া, ভারতের অভ্যন্তরে সাময়িক বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার, পলি জমে তলদেশ ভরাট, ইরিগেশনের সময় ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারসহ জলবায়ুর পরিবর্তন নদীটির অস্তিত্ব সংকটের প্রধান কারণ। তারা আরও বলেন, জরুরী ভিত্তিতে তলদেশ ড্রেজিং, রাবার ড্রাম তৈরি করে পানি সংরক্ষণ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে দিলে অন্যান্য নদ-নদীর মতো মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে না নদীটি।

এলাকাবাসি জানান, ভারতের হিমালয়ের পাদদেশ থেকে নদীটির উৎপত্তি। এরপর ভারতের পশ্চিম দিনাজপুর হয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রত্যেক খরা মৌসুমে ভারতের অভ্যন্তরে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন শেষে বাঁধ কেটে দিলে নদীর পানিপ্রবাহ আবারও স্বাভাবিক হয়ে যায়। বারবার বাঁধ দেওয়া কারণেই ক্রমান্বয়ে নদীর তলদেশ ভরাট যাচ্ছে। এ কারণে প্রতিবছর খরা মৌসুমে শুকিয়ে যাচ্ছে নদীটি।

বয়োবৃদ্ধ তনজেব আলী বলেন, খুব বেশি আগের কথা নয়। আশির দশক জুড়েই নদীটির ভরা যৌবন ছিল। সে সময় আত্রাইয়ে তর্জন-গর্জনে মানুষের বুকে কাঁপন সৃষ্টি হতো। নব্বইয়ের দশক থেকে ক্রমেই যৌবন হারাতে বসে নদীটি। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে নদীটির আর হারানোর কিছুই নেই। সরু মরা খালে পরিণত হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভরা যৌবনে আত্রাই নদীর ঢেউয়ের তালে চলাচল করত পাল তোলা অসংখ্য নৌকা। ভাটিয়ালি আর পল্লীগীতি গানের সুরে মাঝিরা নৌকা নিয়ে ছুটে চলতেন জেলার আত্রাই, রানীনগর, মান্দা, মহাদেবপুর, ধামইরহাট, পত্মীতলাসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলার নদী কেন্দ্রিক ব্যবসা কেন্দ্রগুলোতে। এ নদীকে ঘিরে বিভিন্নস্থানে গড়ে উঠেছে বড়বড় হাটবাজার। ওই সময় আত্রাই নদীর ছিল পূর্ণ যৌবন। এ নদীকে অবলম্বন করে অসংখ্য মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবন জীবিকার সহজপথ খুঁজে পেয়েছিলেন।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ইরিগেশনের সময় ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, পলি জমে তলদেশ ভরাট ও অনাবৃষ্টির কারণে গ্রাউন্ড ওয়াটার সম্পূর্ণ রিচার্জ না হওয়া নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। নদীতে পলি জমে ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি দুই পাড়ের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আঘাত হানে। পানির প্রবল চাপে অনেক সময় বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। নদীর গভীরতা বৃদ্ধি, রাবার ড্রাম তৈরি করে পানি সংরক্ষণসহ নিচের পানির কম ব্যবহার করলে এটিকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবেও মন্তব্য করেন পাউবোর এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানির সঙ্গে নদীর স্তরের একটা সংযোগ রয়েছে। কোন কোন সময় ভূ-গর্ভস্থ পানি নদীতে আবার নদী থেকে পানি ভূ-গর্ভস্থ স্তরে রিচার্জ হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তন ও অনাবৃষ্টির কারণে প্রকৃতির এসব স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটছে। এছাড়া নদীর উৎসের অববাহিকায় বৃষ্টিপাত কম ও ভারতের অভ্যন্তরে সময়ে অসময়ে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আজ আত্রাই নদীর এ অবস্থা। নদীটির অস্তিত্ব হারিয়ে গেলে জীবন-জীবিকার ওপর বিরুপ প্রভাব পড়বে।

তিনি আরও বলেন, নদীর গতিপথ ঠিক রাখতে যত্রতত্র বালু উত্তোলন বন্ধসহ বিশ্ব নদী আইন মেনে পানির সুষম বন্টন হলেই শুধু আত্রাই নয় অন্যান্য নদীগুলোরও অস্তিত্ব বিলিন হবে না।

কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মী

বগুড়ায় ৬ জনকে কুপিয়ে জখম, অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

থমথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত, বিজিবি–বিএসএফের পতাকা বৈঠক

পাবিপ্রবির নতুন ট্রেজারার শামীম আহসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ

রুয়েটের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

বাঘায় বিএনপি নেতার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

চাঁদাবাজি-দখলদারি বন্ধ না হলে যুদ্ধ চলবে: ডা. শফিকুর রহমান

বগুড়ায় পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি নওগাঁয় গ্রেপ্তার

জামায়াতের সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন শহীদ সাকিবের বাবা

সেকশন