নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফারাক্কা বাঁধের জলকপাট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মায় প্রতি তিন ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার পানি বাড়ছে।
আজ সোমবার ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি জলকপাট খোলার কথা বলা হলেও গতকাল থেকেই পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ।
তবে সোমবার ভারতের ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খুব কম সময়ের মধ্যে পানির চাপ তৈরি হয়েছে। এর ফলে ১০৯টি জলকপাটের সব কটি খুলে না দিলে বাঁধের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। তাই ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাংখা এলাকা দিয়ে ভারতের গঙ্গা নদী পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই পয়েন্টে সোমবার ভোর ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ২০ দশমিক ৪৮ মিটার। বিকেল ৩টায় তা হয় ২০ দশমিক ৫০ মিটার। পাংশায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ২২ দশমিক ৫ মিটার।
পাংশার ভাটিতে রাজশাহী নগরের বড়কুটি পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫ মিটার। সোমবার ভোর ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ১৬ দশমিক ২৭ মিটার। সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা আরও ১ সেন্টিমিটার বেশি পাওয়া যায়। বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬ দশমিক ৩০ মিটার।
এদিকে পদ্মার অন্যতম প্রধান শাখানদী চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দায় সোমবার সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৮ দশমিক ৪৭ মিটার। বিকেল ৩টায় পানি বেড়ে হয় ১৮ দশমিক ৪৯ মিটার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পয়েন্টে মহানন্দা নদীর পানির বিপৎসীমা ২০ দশমিক ৫৫ মিটার।
এ বিষয়ে উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানায়নি। আমাদের জানাতে হবে এ রকম কোনো চুক্তিও আমার জানামতে নেই। তবে আমরা দেখে আসছি, প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বাঁধের গেট খোলা রাখা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণত ১০ দিনের জন্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিই। আমরা এখনো মনে করি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে পদ্মাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না। তারপরও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না পানি বাড়ছে বলে। রোববার দুপুর থেকেই পানি বাড়ছে। আরও ২-৩ দিন পার হলে প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে।’