বাতিলের তিন দিন পর পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এই কোটা পুনরায় বহাল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন থেকে এ ঘোষণা ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘কর্মকর্তা, সহায়ক কর্মচারী, সাধারণ কর্মচারী ও পরিবহন কর্মচারী সমিতির’ ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পোষ্য কোটা তাঁদের ‘প্রাতিষ্ঠানিক’ অধিকার। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা এ সুবিধা পেয়ে আসছেন। তাঁদের সন্তানেরা সব শর্ত মেনে যোগ্যতার ভিত্তিতেই ভর্তি হয়। তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। তখন কিন্তু বলা হয়নি, কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নানা জায়গায় কোটা ব্যবস্থা চালু আছে। তাই আমরা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বাতিলের প্রতিবাদ ও তা পুনরায় বহালের দাবি জানাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলেন, ‘আমাদের যে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা, সেটি অনেক দিন থেকেই বলবৎ ছিল। আমাদের সন্তানেরা ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করেই এখানে ভর্তি হয়। তাই আমরা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার পুনর্বহাল চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. মুক্তার হোসেন বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা যত দিন আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার ফিরে না পাব, তত দিন আন্দোলন চালিয়ে যাব। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল অবস্থান কর্মসূচি ও পরদিন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব। এর মধ্যে দাবি মেনে না নিলে পরবর্তীকালে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় চার শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তার সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে শুধুমাত্র সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহ-উপাচার্যসহ প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় ১২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর তাঁরা মুক্ত হন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওই রাতে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব।