রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্যাম্পাসে কলেজছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার ‘অজ্ঞাত’ সহকারী প্রক্টরসহ ১০-১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা মো. জামাল উদ্দিন। এজাহারে কলেজছাত্র শিমুলকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মালেক তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২৩ জানুয়ারি রাতে রাবি ক্যাম্পাস থেকে রাজশাহী কলেজের ছাত্র শিমুলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, ২৩ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে নিহত কলেজছাত্র শিমুল তাঁর এক মেয়েবন্ধুকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। এমন সময় ড. কুদরাত-ই-খুদা একাডেমিক ভবনের সামনে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অজ্ঞাত সহকারী প্রক্টর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে বলেন, ‘তোমরা কারা।’ তখন শিমুল উত্তর দেওয়া মাত্রই অজ্ঞাত সহকারী প্রক্টর ‘ধর ধর’ বলে চিৎকার করেন।
এ সময় কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি ও শিক্ষার্থী শিমুলকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তৃতীয় ও চতুর্থ বিজ্ঞান ভবনের মাঝে থাকা শিক্ষার্থীরা অজ্ঞাত ওই সহকারী প্রক্টরের নির্দেশে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করার জন্য ধাওয়া দিয়ে আসে।
এতে আরও বলা হয়, এ সময় তাঁদের মধ্যে একজন শিক্ষার্থী ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যাট দিয়ে পেছন থেকে শিমুলের ঘাড়ে আঘাত করে মোটরসাইকেল থামায়। পরে মোটরসাইকেল থেকে শিমুলের সঙ্গে থাকা বন্ধু জান্নাতুল ফেরদৌস মিষ্টিকে (১৭) নামিয়ে সেই সহকারী প্রক্টর চড়-থাপ্পড় মারেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০-১৫ শিক্ষার্থী ওই সহকারী প্রক্টরের নির্দেশে শিমুলকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিমুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে মতিহার থানার ওসি মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘নিহত শিমুলের বাবা বাদী হয়ে গতকাল রাতে মামলা করেছেন। মামলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তের জন্য প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ ও সুরতহাল রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য কোর্টে আবেদন করা হয়েছে।’