বগুড়া ও শেরপুর প্রতিনিধি
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে পূজা কর্মকার সিঁথিকে (২২) নিয়ে বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন ঝুমা কর্মকার (৪৫)। পথে বাসের মধ্যে ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে তাঁর বুকে ও পেটে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মেয়ে পূজার বিরুদ্ধে। এতে মারা গেছেন ঝুমা কর্মকার। স্থানীয় লোকজন পূজাকে ধরে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানা-পুলিশে সোপর্দ করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের চান্দাইকোনা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ঝুমা কর্মকার বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর সাহাপাড়া মহল্লার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিন্দ্রনাথ কর্মকারের স্ত্রী। তাঁদের মেয়ে পূজা কর্মকার সিঁথি ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মা নিহত ও মেয়ে আটক হওয়ার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা। তিনি বলেন, ‘নিহতের লাশ ও তাঁর মেয়ে রায়গঞ্জ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। নিহতের মেয়ের ব্যাগ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।’
ওসি বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার পূজার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিল। এ কারণে মা ঝুমা কর্মকার মেয়েকে ঢাকায় রাখতে যাচ্ছিলেন। আজ দুপুর ১টার দিকে বাসটি মহাসড়কের চান্দাইকোনা পৌঁছালে পূজা বাসের সুপারভাইজারকে বলেন জানালা দিয়ে তাঁর বই পড়ে গেছে। পূজার কথায় বাস থামানো হলে তাঁর মা সিট থেকে উঠে দাঁড়ায়। এ সময় ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে মায়ের পেটে ও বুকে আঘাত করে দ্রুত বাস থেকে নেমে যান পূজা। এ সময় বাসের যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন পূজাকে একটি দোকানে আটকে রাখেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ঝুমাকে রায়গঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’
ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে শেরপুরে একটি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে পূজার সম্পর্ক ছিল। ওই শিক্ষক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় পূজার মা বিষয়টি মানতে পারছিলেন না। এ নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এই ঘটনার পর ওই শিক্ষককে আটক করতে গিয়ে পাওয়া যায়নি।’
স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক পূজা কর্মকারকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল রায়গঞ্জ থানায় হওয়ায় সেখানেই মামলা হবে বলে জানান শেরপুর থানার ওসি।