হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

ফের চালু হলো রোকনের দোকান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী    

রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনালের সামনে রোকনের দোকানটি আবার খুলেছে। আজ সোমবার দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তৃতীয় লিঙ্গ রোকনের বন্ধ হয়ে যাওয়া দোকানটি আবার খুলেছে। তাঁর ছোট্ট দোকানটিতে এখন পর্যাপ্ত মালামাল আছে। দোকান চালিয়ে রোজ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা রোজগার হচ্ছে রোকনের। বাড়িতে খাবার জুটছে। তিনি এখন তাঁর মাকে নিয়ে ভালোই আছেন।

রোকনের বাড়ি নগরের বালিয়াপুকুরে, আর দোকান শিরোইল বাস টার্মিনালের সামনে। বাবার রেখে যাওয়া ছোট্ট এই দোকানটি চালিয়েই মা শেফালি বেগম আর নিজের পেট চালাতেন রোকন। গত জুলাইয়ের কারফিউ এবং পরবর্তী সময়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পুঁজি হারিয়ে দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছিল মা-ছেলের।

এ নিয়ে গত ২২ অক্টোবর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘কাল সারা দিন আমি আর আম্মা কিছুই খাইনি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সদস্য হয়েও রোকন অন্য পাঁচজনের মতো চাঁদা না তুলে মাকে নিয়ে জীবন চালাতে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কীভাবে সংগ্রাম করছেন, সে বিষয়টি উঠে আসে সংবাদে।

সংবাদ প্রকাশের পর একজন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রবাসী এক নারী আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন রোকনকে। তবে তাঁরা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।

সংবাদ প্রকাশের পর দিনই রাজশাহীর একজন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রোকনকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। তিনি আজকের পত্রিকার রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদকের মাধ্যমে রোকনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই কর্মকর্তা রোকনের হাতে তুলে দেন পাঁচ হাজার টাকা।

এ টাকা পেয়ে রোকন তিন হাজার টাকায় দোকানের জন্য কিছু পান-সিগারেট কেনেন। আর দুই হাজার টাকায় কেনেন চাল-ডাল। পান-সিগারেট নিয়েই রোকন দোকানটি খুলেছিলেন। এরপর গত ২৫ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক নারী রোকনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন।

চট্টগ্রামের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তিনি আজকের পত্রিকার রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় থাকা আরেক নারীর মাধ্যমে তিনি রোকনের জন্য ২০ হাজার টাকা পাঠান। পরদিন রোকন এ টাকা হাতে পান। এ টাকায় রোকন তাঁর দোকানের জন্য মালামাল কেনেন। দোকানটি এখন ভালোই চলছে।

রোকনের দোকানে কেনাবেচা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ সোমবার দুপুরে বাস টার্মিনালের সামনে গিয়ে দেখা যায়, নিজের দোকানে বসে আছেন রোকন। বললেন, এখন দোকান তাঁর ভালোই চলছে। রোজ ৫০০–৬০০ টাকা আয় হচ্ছে। এ টাকায় মাকে নিয়ে ভালোই চলছে তাঁর সংসার।

রোকন বলেন, ‘আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের কারণে আমি সহযোগিতা পেয়েছি। যাঁরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আজকের পত্রিকা এভাবেই অসহায় মানুষের কথা তুলে ধরবে—এটাই চাওয়া।’

রোকনের দোকানের সামনে বাসের সুপারভাইজার মো. রুবেল বললেন, ‘রোকনকে অনেক দিন ধরেই চিনি। সে তৃতীয় লিঙ্গ হলেও অনেকের মতো হাটে-বাজারে চাঁদা তোলে না। সে দোকান চালিয়ে সংসার চালায়। এটা ভালো লাগার বিষয়। আর ছেলে হিসেবেও সে খুব ভালো।’

রাজশাহীতে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সমাজের মূল স্রোতোধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে দিনের আলো হিজড়া সংঘ নামের একটি সংগঠন।

সংগঠনটির সভাপতি মোহনা বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গ হয়েও রোকন আদি পেশায় না গিয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারপর পুঁজি হারিয়ে সে বিপদে পড়ে গিয়েছিল। সে কী করবে না করবে ভেবে পাচ্ছিল না। ঠিক সে মুহূর্তে একটি সংবাদের মাধ্যমে মানুষের সহযোগিতায় সে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ রকম সহযোগিতা পেলে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর অনেকেই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে।’

কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মী

বগুড়ায় ৬ জনকে কুপিয়ে জখম, অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

থমথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত, বিজিবি–বিএসএফের পতাকা বৈঠক

পাবিপ্রবির নতুন ট্রেজারার শামীম আহসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ

রুয়েটের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

বাঘায় বিএনপি নেতার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

চাঁদাবাজি-দখলদারি বন্ধ না হলে যুদ্ধ চলবে: ডা. শফিকুর রহমান

বগুড়ায় পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি নওগাঁয় গ্রেপ্তার

জামায়াতের সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন শহীদ সাকিবের বাবা

সেকশন