আর কয়দিন পরই আমের সোনালি মুকুলে ভরে যাবে রাজশাহী। দু-একটি করে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে মুকুল উঁকি দেওয়াও শুরু করেছে। এই সময়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে আট মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর আকাশে ঝলমলে রোদও উঠেছে।
গাছে মুকুল আসার এই সময়ে বৃষ্টির পর ঝলমলে রোদ আমের জন্য খুবই ভালো বলছেন কৃষক আর কৃষি কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেছেন, এই বৃষ্টিতে গাছের গোড়ায় একটা সেচ হয়ে গেছে। পাতায় পাতায় জমে থাকা ধুলোবালি ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখন গাছে ভালোভাবে সালোকসংশ্লেষণ হবে। বৃষ্টির কারণে গাছগুলো নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে। আর বৃষ্টি শুরু হয়েছে ৫টা ৫০ মিনিট থেকে। অর্থাৎ ভোরের আলো ফোটার আগেই ফাল্গুনের বর্ষণে ভিজেছে রাজশাহী। বৃষ্টি চলেছে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। এ সময় রাজশাহীতে আট মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কখনো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে। তাতে শুষ্ক বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতিতে প্রাণ ফিরেজে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর আকাশে সূর্যের দেখা মেলে। ঝলমলে রোদে ভরে ওঠে প্রকৃতি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘এখন গাছে মুকুল আসবে। কিছু গাছে ইতিমধ্যে মুকুল দেখা দিয়েছে। এই সময়ে গাছের প্রচুর খাদ্য দরকার। কিন্তু দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না থাকলে গাছের পাতায় ধুলোবালি জমে গিয়ে খাদ্য তৈরি বাধাগ্রস্ত হয়। এই বৃষ্টিতে ধুলোবালি ধুয়ে পাতা চকচকে সবুজ হয়ে গেছে। এখন গাছের খাদ্য তৈরি হবে বেশি। ফলে আমের ভালো ফলন হবে। এই বৃষ্টিটা খুব দরকার ছিল।’
মোজদার হোসেন আরও বলেন, ‘বৃষ্টির পর রোদ না উঠলে যে গাছে মুকুল চলে এসেছে, সেই মুকুলের ক্ষতি হতো। কিন্তু রোদ উঠে যাওয়ায় ওই ক্ষতি হবে না। বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজেরও উপকার হবে। এই বৃষ্টির কারণে কোনো ফসলের ক্ষতি হয়েছে এ রকম কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত আসেনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ধরনের বৃষ্টি সাধারণত কিছু সময় পরই থেমে যায়। আজও তা-ই হয়েছে।