বগুড়ার শেরপুরে আম্বইল গ্রামে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণ এবং স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে চলমান বিরোধ নিরসনে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আজ সোমবার শেরপুরে জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এ সমাবেশ চলে। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম আলী বেগ।
আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন বলেন, ‘আদিবাসীরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। তারা কখনোই ঝগড়াবিবাদ চায় না। জমি নিয়ে বিরোধ থাকলে আদালতের নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু তাদের ওপর নির্মমভাবে হামলা করা হয়েছে। এই ঘটনায় মসজিদের মাইকে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়িয়ে আদিবাসীদের নির্মূলের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রশাসনকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মজনু বলেন, ‘এখানে যে ঘটনা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। এটা নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার সুযোগ নেই। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে, এর একটা সুষ্ঠু সমাধান করতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
////মাসুম আলী বেগ বলেন, ‘আমরা এখানে জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা রাখি না। এটা আদালতের দায়িত্ব। কিন্তু এটা নিয়ে কোনো সংঘাত সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো যাবে না।’
আলোচনা শেষে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণ এবং স্থানীয় অধিবাসী উভয় পক্ষের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি আহ্বান করা হয়। সেখানে তাদের পক্ষের আইনজীবীও থাকবে। তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের একটি দল কাগজপত্র দেখে ও আলোচনা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবেন।
উল্লেখ্য, শেরপুরের আম্বইল গ্রামে ৮ জানুয়ারি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগণ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। এরপরই ১১ জানুয়ারি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগণের ওপর স্থানীয়রা হামলা করে। সে সময় তিনটি মসজিদ থেকে মাইকে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে শতাধিক মানুষ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনগণের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তখন থেকে তারা স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন বলে তাদের অভিযোগ। এই বিরোধ নিরসনের জন্যই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।