নাটোর প্রতিনিধি
নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পরাজিত নৌকার প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের বাড়িঘর ও দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ২০টি বাড়িঘর ও দোকানে হামলা হয়েছে।
এসব বাড়িঘর ও দোকানপাট নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে পরাজিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীদের। ঘটনার পর থেকে তাঁর অনেক অনুসারী আত্মগোপনে আছেন।
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারী ও স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী এ সহিংসতায় অংশ নিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ আসনের সাবেক এমপি ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ ঈগল প্রতীক নিয়ে ৭৭ হাজার ৯৪৩ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
জাকারিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজাদ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর কর্মী হিসেবে পরিচিত দয়ারামপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় ইউপি সদস্য আক্কাস আলীর নেতৃত্বে তাঁর ছেলে সবুজ, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল, লিটন, শাহজালাল, কালুসহ ৮-৯ জন তাঁর বাড়িতে হামলা চালান।
তিনি বলেন, ‘আমাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই মেরে ফেলা হবে বলে আমার মাকে শাসিয়েছে মেম্বারের লোকজন। আমার বাসার সামনে এখনো মেম্বারের লোকজন আমার খোঁজে বসে আছে।’
ফলাফল ঘোষণার পর সাবেক এমপি বকুলের অনুসারী বাগাতিপাড়া পৌরসভার টুনিপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী রুহুল আমিন রুবেলের বাড়িতে হামলা হয়।
রুবেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাত থেকে আমার বাসায় আমাকে কয়েক দফা খুঁজতে এসেছে বিএনপি ও স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এমপির লোকেরা। আমার বাবা কুয়েতপ্রবাসী। বাসার নারীদের বলে গেছে, আমি বাসায় এলে পরিণতি খারাপ হবে। আমি এখন অন্য একজনের বাড়িতে অবস্থান করছি।’
এ সময় বিএনপির কর্মীরা বাড়িতে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও দুটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ছাড়া রোববার রাতেই ভাঙচুর করা হয়েছে দয়ারামপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারের মিস্টারের মুদিদোকান ও চা-স্টল, বাগাতিপাড়া পৌর ১নং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হাজি, আওয়ামী লীগ কর্মী কাচু ও তুষারের বাড়ি।
গাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নান্নু খান বলেন, ‘বিজয় মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। মৌখিকভাবে অভিযোগের পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদকে মোট চারবার কল করা হয়। শেষবার ফোন ধরে তিনি বলেন ‘পরে কথা বলব’ বলে রেখে দেন।