রাস্তার ময়লা আবর্জনা থেকে স্বর্ণ সংগ্রহ করাই পেশা ‘রতন সন্ধানী’ কামাল ব্যাপারীর। ২০ বছর হলো বিচিত্র এ পেশায় যুক্ত করেছেন নিজেকে। তাই তো নিজ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে কখনো পাবনা, কখনো সিরাজগঞ্জ, কিংবা কুড়িগ্রামে। এভাবে রাস্তার ময়লা খুঁটে জীবনসংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যতিক্রমী পেশার এ মানুষ।
পাবনার বেড়া বাজার সোনাপট্টির রাস্তা ঘেঁষে রয়েছে অন্তত ২০টি জুয়েলারি দোকান। এ ছাড়া আছে স্বর্ণের অলংকার তৈরির কারখানা। এই রাস্তাতেই আপন মনে এক হাতে ঝাড়ু দিয়ে যাচ্ছেন কামাল শেখ। অন্য হাতে বেলচা নিয়ে রাস্তায় ময়লা খুঁটিয়ে দেখছেন তিনি। কারণ, এই রাস্তাই যে তাঁর কাছে স্বর্ণ সন্ধানের ক্ষেত্র। রাস্তায় কারিগরদের ফেলে দেওয়া আবর্জনা থেকে তিনি খুঁজে পান স্বর্ণ। ২০-২৫ দিন পরপর এই রাস্তায় এসে তিনি ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা থেকে ময়লা-আবর্জনাগুলো তুলে নেন। এ জন্য কাউকে কোনো টাকা-পয়সা দিতে হয় না তাঁর।
তবে আয় কমে গেলেও এ পেশা থেকে বের হওয়া কামালের পক্ষে সম্ভব নয়। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ভাই এটি আমার নেশাতে পরিণত হয়েছে। রাতে ঘুমানোর মধ্যেই স্বপ্ন দেখি কালকে মনে হয় রত্ন মেলবে। সব সময় পাওয়ার নেশায় এ জেলা থেকে অন্য জেলায় ঘুরে বেড়াই। এভাবে ২০ বছর ধরে রাজবাড়ী, ভোলা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম জেলার নির্দিষ্ট কিছু এলাকার ময়লা পরিষ্কার করেই আয় করছি।’
কামালের জীবনের সবচেয়ে বড় আশা ছিল একমাত্র ছেলেটি উচ্চশিক্ষিত হবে। জেলায় জেলায় ঘুরে লেখাপড়ার মূল্য ভালোই অনুধাবন করেছেন তিনি। কিন্তু ছেলেটি নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে যোগ দিয়েছে মিস্ত্রির কাজে। তাই ‘রতন সন্ধানী’ কামালের আক্ষেপটা হয়তো সারা জীবনই রয়ে যাবে।