ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে স্বর্ণা দাস ও জয়ন্ত কুমার সিংহের হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
মানববন্ধনে প্রতিবাদের পাশাপাশি সীমান্তে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে জঘন্য ও বেআইনি হুমকি দিয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করেন বক্তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ফেলানী থেকে স্বর্ণা, স্বর্ণা থেকে জয়ন্ত, তারপর?’, ‘সীমান্তে আর কত বাংলাদেশি মারবে ভারত?’, ‘ফেলানী থেকে শ্রী জয়ন্ত, বাংলাদেশ আর কতকাল থাকবে ঘুমন্ত?’, ‘বন্ধু প্রতিবেশী না বৈরী প্রতিবেশী?’, ‘মিস্টার মোদি কী চান?’, ‘পাক-চীন সীমান্তে কাঁপো থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেন শিশু মারো?’ প্রভৃতি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিম রহমান বলেন, ‘দুই দেশের মাঝে সীমান্ত থাকলে সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুলি চালিয়ে মানুষ মারা যুক্তিযুক্ত নয়। হত্যাকাণ্ডের পরিবর্তে তারা আটক করে জরিমানা কিংবা আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দিতে পারত। তারা সীমান্তে প্রবেশ নিষিদ্ধে সতর্কতামূলক নির্দেশনা না দিয়ে ধারাবাহিকভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। এ থেকে বোঝা যায় ভারত বাংলাদেশের না, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বন্ধু ছিল।’
জুয়েল রানা নামে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভারত যত কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে, তার মধ্যে সীমান্ত হত্যা একটি অন্যতম ঘটনা। আমরা দেখেছি, ২০১১ সালে কী নির্মমভাবে তারা ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল। আমরা এ ধরনের জঘন্যতম সকল হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘মিস্টার রাজনাথ সিং, মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ ও রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করেছেন। আবার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন। এ ধরনের আহ্বান অত্যন্ত জঘন্য, নিন্দনীয়। আর আন্তর্জাতিক আইন খেলাপি আচরণ। যার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রশ্ন তুলেছেন। আমরা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে তাঁর এ বক্তব্যের তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাই।’
কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিজ আহমেদ। কর্মসূচিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।