সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরজগঞ্জে বন্যায় মানুষের মতো গবাদিপশুও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে প্রায় ৩০ হাজার গবাদিপশু এখন পানিবন্দী। এদের পলিথিন কিংবা কাপড়ের তৈরি ছাউনি তৈরি করে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে রাখা হয়েছে।
বন্যার পানিতে জেলায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি, চারণভূমি, চরাঞ্চল এবং নিচু এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর খাদ্যসংকট। তবে তাঁদের পক্ষ থেকে গবাদিপশুর জন্য খাবার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওমর ফারুক।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বেলুটিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, ‘ঘরবাড়ি তলাইয়া গেছে। রাস্তাঘাট তলাইয়া গেছে। গরু-বাছুর নিয়া বিপদে পড়ছি। বাড়িতে রান্না করতে পারি না। সব জাগাতে পানি। আমগোরে থাকার জাগা নাই, গরু-ছাগল রাখমু কোনে। ঠিকমতো গরু-ছাগলের খাওন দিবার পারছি না।’
এদিকে আবারও কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ১৫ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনো পানিবন্দী অবস্থায় দিন পার করছে জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ১ লাখ মানুষ। সড়কে পানি থাকায় ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা। বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও শতাধিক তাঁত কারখানা। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার কৃষক ও শ্রমজীবীরা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, পানি কমতে শুরু করেছে। সার্বিক বন্যাপরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। শুক্রবার থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে পানি বাড়ার আশঙ্কা নাই।