নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় যুবলীগের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার রাতে ফাগুয়ারদিয়ার ইউনিয়নের পাঁচুরিয়া মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তাঁর এক হাত ও পা ভেঙে গেছে।
আহত যুবলীগ কর্মীর নাম রুহুল আমিন রুবেল (৩৫)। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অভিযোগ, হামলায় অভিযুক্ত বিএনপি কর্মীরা প্রয়াত যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান পটলের অনুসারী।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুহুল আমিন রুবেল জানান, গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে তিনি মোটরসাইকেলে করে টুনিপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের কাছে পৌঁছালে তাঁর মোটরসাইকের সামনে হঠাৎ একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান ঠেলে দেন অজ্ঞাত কয়েকজন। যার নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপি কর্মী হায়দার। এ সময় শাহাব, সাইফুল, মতিন, মিরাজ, কালু, আমিরুল, মকছেদ, দুলু তাঁকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে।
রুবেলের দাবি, তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ঘাড় ও বাম পায়ে আঘাত করে এবং লাঠি দিয়ে পেটায়। তিনি পাশের একটি ডোবায় লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে হামলাকারীরা টর্চ জ্বালিয়ে ইট ও গাছের ডাল দিয়ে তাকে আঘাত করে। পরে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে তারা চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করেন।
আহত রুবেল আরও বলেন, ‘গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে এ আসনে (নাটোর-১) নৌকা পরাজিত হলে বিএনপির এই কর্মীরাই তার বাড়িতে তিন বার হামলা করে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আবারও হামলা করেন তারা। সেদিন থেকে দিনে বাড়িতে থাকতে পারতাম না। কিছুদিন আগে থেকে রাতে বাড়িতে ফিরতাম ভোরে চলে যেতাম। টের পেয়ে বিএনপির লোকজন এ হামলা করল।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আব্দুর রাকিব জানান, রুবেলের বাম পায়ে ছুরির আঘাতে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এবং মারধরের কারণে পা ও বাম হাতের দুটি হাড় ভেঙে গেছে।
বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু হামলার জন্য বিএনপি কর্মীদের দায়ী করে জড়িতদের গ্রেপ্তারে দাবি জানান।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
নাটোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ বলেন, বিএনপি কর্মীরা হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। এটি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে ঘটতে পারে।
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল হক জানান, ঘটনাটি শুনেছেন, তবে এখনো কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।