গত রোববার মহালয়ার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার দিনক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। এবার উৎসব উপলক্ষে বগুড়ার নন্দীগ্রামে ৪৬টি মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজার আয়োজন। এ বছর দেবী দুর্গা হাতির পিঠে চড়ে পৃথিবীতে, অর্থাৎ বাবার বাড়িতে আসবেন। আর কৈলাসে স্বামীর বাড়িতে ফিরবেন নৌকায় চড়ে।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী শনিবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পরে আগামী বুধবার বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
সরেজমিন নন্দীগ্রামের বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে ও আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্গা উৎসব শুরু হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি। তাই এখন প্রতিমা তৈরি, সাজসজ্জা, হাটবাজার ও নাড়ু-বড়ি তৈরি করতে বাড়ির নারীসহ সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার থালতাশ্বরী দুর্গামন্দিরে প্রতিমাগুলোতে রং-তুলি দিয়ে সুসজ্জিত করছেন ওই গ্রামের মৃৎশিল্পী সুব্রত কুমার। তিনি বলেন, ‘প্রতিমা তৈরি করতে অনেক সময় লাগে। প্রতিমা তৈরির সব উপকরণের দাম বেশি। তাই প্রতিমা তৈরি করে আগের মতো লাভ হয় না। তার পরও এই পেশা ছাড়তে পারছি না। এবারের পূজা উপলক্ষে তৈরি করা প্রতিমাগুলোতে রং-তুলি দিয়ে সুসজ্জিত করা হচ্ছে।’
নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার কলেজপাড়ার গৃহিণী রম্পা রানী বলেন, ‘দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমরা প্রতিবছর অনেক ধরনের নাড়ু-বড়ি তৈরি করি। এর মধ্যে রয়েছে তিলের নাড়ু, নারিকেলের নাড়ু, দুধের নাড়ু, গঙ্গাজলির নাড়ু, খই, মুড়কি, মুড়ির মোয়া, চানাচুরের মোয়া ও ভেটের খইয়ের মোয়া।’
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিফা নুসরাত বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদ্যাপনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধন প্রতিষ্ঠায় সামাজিক-সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া প্রতিটি মণ্ডপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশা করছি, নন্দীগ্রামে সুন্দরভাবে দুর্গাপূজার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।’