শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
সাধু-সন্ন্যাসী আর বাউলদের উপস্থিতিতে জমে উঠেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ের বৈশাখী উৎসব ও পুণ্যার্থী মেলা। মহাস্থানগড় হজরত শাহ সুলতান বলখীর (র.) মাজার এলাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার সাধু-সন্ন্যাসী আর পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। বাউলদের জারি-সারি আর মারফতি গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে এবারের উৎসব।
আজ বৃহস্পতিবার মেলার দিন হলেও সপ্তাহখানেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাধু-সন্ন্যাসী ও পুণ্যার্থীরা এখানে এসে আস্তানা গেড়েছেন। দিনভর কাঁসা ও ঢাকঢোলের মতো যন্ত্রের বাজনায় মুখর প্রাচীন বাংলার রাজধানী পুণ্ড্রনগর।
মেলায় বসেছে মিষ্টান্ন আর নানা প্রকার খেলনা ও প্রসাধনসামগ্রীর পসরা। এ ছাড়া মহাস্থানের প্রসিদ্ধ কটকটির দোকানগুলো সেজেছে নতুন সাজে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মহাস্থানগড়ে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। মেলার কয়েক দিন আগে থেকেই মহাস্থানগড়সহ আশপাশের এলাকায় উৎসবের ধুম পড়ে যায়। মেলা উপলক্ষে এ এলাকার বাড়ি বাড়ি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
মহাস্থানগড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম সোহাগ জানান, ঐতিহাসিক এই উৎসবের গোড়াপত্তন সম্পর্কে কারও সঠিক ধারণা নেই। তবে বংশপরম্পরায় কয়েক শ বছর ধরে এখানে বার্ষিক উৎসব আয়োজন হয়ে আসছে।
লোকমুখে শোনা যায়, মহাস্থানগড়ের এই মাজারে বসেই ইংরেজদের হটাতে ফকির বিদ্রোহ পরিচালনা করেছিলেন ফকির মজনু শাহ। একপর্যায়ে তিনি বিজয়ীও হয়েছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে এ বিদ্রোহকে স্মরণীয় করে রাখতেই বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার এই উৎসব আয়োজন হয়ে আসছে। এ কারণেই উৎসবে শত শত ফকির-সন্ন্যাসীর আগমন ঘটে।
মাজার এলাকায় অবস্থিত নাসির কটকটি ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. রঞ্জু ইসলাম বলেন, ‘মেলা উপলক্ষে প্রচুর বেচাবিক্রি হচ্ছে। গত বছর ৯০ মণ বিক্রি করেছি। এবার এর থেকে বেশি হবে আশা করি। মাজারের আশপাশে অন্তত ২০০ কটকটির দোকান রয়েছে। এসব দোকানে প্রতিবছর কোটি টাকার বেশি কটকটি বিক্রি হয়।’