রাবি প্রতিনিধি
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রতিবাদে ‘অগ্রণী ব্যাংক স্বর্ণপদক’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসনকে ফেরত পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নূরুল হুদা। আজ সোমবার কুরিয়ার সার্ভিস থেকে স্বর্ণপদক ও সনদপত্রটি বুঝে পান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী (রাবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আজ দুপুরে নূরুল হুদার স্বর্ণপদক ও সনদপত্র হাতে পেয়েছি। এখন পার্সেলটি আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করব।’
এর আগে গত শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ‘অগ্রণী ব্যাংক স্বর্ণপদক’ ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নূরুল হুদা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রার্থীদেরও শিক্ষকদের পেছনে ধরনা ধরতে হয় কিংবা অর্থ লেনদেন করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত হয়েও নিয়োগের জন্য শিক্ষকদের পেছনে ধরনা ধরা কিংবা অর্থ লেনদেন করা প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের অবমাননার শামিল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করছি।’
এ বিষয়ে নূরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির তদন্তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
আমার প্রত্যাশা ছিল, সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এসবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না দেখে গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দুটি স্বর্ণপদক ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল (রোববার) কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে স্বর্ণপদক ফেরত পাঠিয়েছি।’
নূরুল হুদা লালমনিরহাট জেলার মৃত আহর উদ্দীনের ছেলে। তিনি জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ভর্তি হন। এলএলবিতে (সম্মান) সিজিপিএ-৩.৬৫৪ এবং এলএলএমে ৩.৬০৭ অর্জন করেন। এলএলবি পরীক্ষার ফলাফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে প্রথম স্থান অর্জন করায় ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক এবং ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পান তিনি।