হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

চলনবিলের শুঁটকিতে আগ্রহ বাড়ছে ক্রেতাদের

নাইমুর রহমান, নাটোর

প্রতি বছরই চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া থেকে প্রচুর পরিমাণে দেশীয় ছোট-বড় মাছ আহরণ করা হয়। এই মাছের একটি বড় অংশ অবিক্রীত থেকে যায়। এই অবিক্রীত মাছ থেকেই তৈরি হয় শুঁটকি। আর ক্রমেই সিংড়ার মিঠাপানির মাছের শুঁটকির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। এখন বেশ চড়া দামেই এসব শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে। সিংড়ায় চারটি চাতাল ও ৩০টি এলাকায় বিলের মাছ সংগ্রহ করে শুঁটকি তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত আছেন তিন শতাধিক মানুষ। 

শুঁটকি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতরা জানান, প্রতিবছর ভরা বর্ষায় বিলের নতুন পানিতে প্রচুর দেশি মাছ বংশবিস্তার করে। যে কেউ হাঁটুপানিতে নেমেই এসব মাছ ধরতে পারে। এসব মাছ রান্না করে খাওয়ার পরও অবশিষ্ট থাকে। তখন বাজারেও সস্তায় বিক্রি হয় মাছগুলো। সস্তায় কেনা মাছগুলোই শুকানো হয় শুঁটকির জন্য। 

গতকাল শনিবার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের নিঙ্গইন শুঁটকি চাতাল ঘুরে দেখা যায়, টাকি, শোল, বাতাসি, চান্দা, পুঁটি, ট্যাংরা, গজার, মাগুর, কই, চিংড়িসহ হরেক প্রজাতির দেশি মাছ কেটে বাঁশের মাচায় শুকাতে দেওয়া রয়েছে। চাতালের পাশে ছাউনির নিচে আরও মাছ নিয়ে বসেছেন কয়েকজন নারী। তাঁরা মাছ কেটে টুকরিতে রাখছেন। মাচায় দেওয়ার আগে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নেওয়া হচ্ছে মাছগুলো। 

মাচায় থাকা ভেজা মাছগুলোও এপিঠ-ওপিঠ উল্টে রাখছেন কেউ কেউ। চাতালঘরে রাখা শুঁটকিগুলো আবারও রোদে শুকানো হচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাছ কাটা, বাছাই, ধোয়া, রোদে শুকানো, মাচা থেকে চাতালে তোলার কাজে শ্রমিকেরা ব্যস্ত সময় পার করেন। 

মহাসড়কের পাশে মাচার ওপর শুঁটকির পসরা সাজিয়ে বিক্রিও করছেন কেউ কেউ। গাড়ি থামিয়ে অনেকেই কিনে নিচ্ছেন শুঁটকি। 

বিক্রেতারা জানান, শৈল মাছের শুঁটকির কেজি আকারভেদে ১৬০০ টাকা, চান্দা ৯০০ টাকা, ট্যাংরা দেশি ১৬০০ টাকা, ট্যাংরা বিদেশি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, পুঁটি ৬০০ টাকা, টাকি ৮০০ টাকা, চেলা ১০০০ টাকা, রাইকোর ৫০০ টাকা, বাতাসি ১২০০ টাকা, গুচি আকারভেদে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা, কাঁচকি ৯০০ টাকা, বোয়াল ১৩০০ টাকা, চাপিলা ৮০০ টাকা, মলা ৮০০ টাকা ও বাইম ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের স্বল্পতার কারণে বিলের চিংড়ি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশি চিংড়ি মাছ খুবই সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে তোলামাত্র তা বিক্রি হয়ে যায়। শুঁটকি তৈরির জন্য চাতাল পর্যন্ত চিংড়ি আর আসে না। 

শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলেন, এই এলাকায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মণ শুঁটকি বিক্রি হয়। তবে সিংড়ার শুঁটকিগুলোর বেশির ভাগ চলে যায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের শুঁটকি বাজারে। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, দিনাজপুর, কক্সবাজার, রাজশাহী, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এখানে এসে শুঁটকি কিনে নিয়ে বিক্রি করেন। এখানকার শুঁটকি প্রস্তুতে লবণ ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না করায় চাহিদা বাড়ছে দিনদিন। 

সৈয়দপুরের শুঁটকি ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার বলেন, এখানে কোনো ধরনের রাসায়নিক না দেওয়ায় সৈয়দপুরের শুঁটকির বাজারে সাংড়ার শুঁটকির চাহিদা বেশি।

শুঁটকি চাতাল মালিক নাসির উদ্দীন বলেন, পর্যাপ্ত উৎপাদন হলেও এখনো স্থানীয় বাজার সৃষ্টি হয়নি। সড়কের ধারে চাতাল থেকে শুঁটকি কিনতে পারেন না অনেকেই। ফলে বিক্রি কমে গেলে শুঁটকিগুলো কখনো কখনো জেলার বাইরের মোকামগুলোয় নিয়ে যেতে অনেক বেশি খরচ পড়ে। তখন লাভের পরিমাণ কমে যায়। 

শুঁটকি ব্যবসায়ী জমির উদ্দীন বলেন, মাছ রাখার একটা জায়গা আমাদের খুব দরকার। বর্ষাকালে পানির দামে যেসব মাছ বিক্রি হয়, সেগুলো শীতকাল পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারলে সারা বছর শুঁটকি বিক্রি করা সম্ভব। 

নাটোরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্থানীয় জেলেরা সংরক্ষণাগার ও ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট বাজার দাবি করেছেন। তাঁদের প্রয়োজনের বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি। শুঁটকির সম্ভাবনার ব্যাপারে আমরা ইতিবাচক রয়েছি।’

কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মী

বগুড়ায় ৬ জনকে কুপিয়ে জখম, অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

থমথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত, বিজিবি–বিএসএফের পতাকা বৈঠক

পাবিপ্রবির নতুন ট্রেজারার শামীম আহসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ

রুয়েটের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

বাঘায় বিএনপি নেতার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

চাঁদাবাজি-দখলদারি বন্ধ না হলে যুদ্ধ চলবে: ডা. শফিকুর রহমান

বগুড়ায় পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি নওগাঁয় গ্রেপ্তার

জামায়াতের সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন শহীদ সাকিবের বাবা

সেকশন