কুড়িগ্রামে হলফনামার নামে সেবাগ্রহীতাকে হয়রানি করায় আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক কবির হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (৩য় আদালত) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মজনু মিয়ায় আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার একই আদালত উপসহকারী পরিচালক কবির হোসেনকে শোকজ করে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের আদেশ প্রদান করেন।
আদেশে বলা হয়, পাসপোর্ট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত পরিপত্র মোতাবেক জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে পাসপোর্ট সংশোধন করতে হলফনামার প্রয়োজন নেই বলে জানানো হয়। তবু উপসহকারী পরিচালক কবির হোসেন সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির উদ্দেশে হলফনামা করার জন্য আদালতে পাঠান। এতে সেবাপ্রার্থী জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন মর্মে আদালতের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া অহেতুক হলফনামা সম্পাদন করতে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে অপ্রয়োজনীয় সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে। এতে করে আদালতের বিচারিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এমতাবস্থায় অভিযুক্ত উপসহকারী পরিচালক কবির হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ঘটনা সম্পর্কে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে উপসহকারী পরিচালক কবির কাঠগড়ায় দাঁড়ালে আদালত তাঁর কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি না করার জন্য আদালত তাঁকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার সতর্ক করেন আদালত। এ ছাড়া পাসপোর্ট অফিসে যেন কোনো দালাল থাকতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপসহকারী পরিচালক কবির হোসেনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরিপত্রের বাইরে গিয়ে অহেতুক কাউকে হয়রানি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, ‘আগামী এক মাস পুরো বিষয়টি আদালত মনিটরিংয়ে রাখবে। এর পরও পাসপোর্ট অফিসে কোনো সেবাপ্রার্থী হয়রানির শিকার হয়ে অভিযোগ করলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) লিয়াকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত কুড়িগ্রাম জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক কবির হোসেনের লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণ করে তাঁর ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করেছেন।