বিরল ও দিনাজপুর প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বেতুড়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে। তাঁর বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন এমনকি এলাকাবাসী কেউই তাঁর মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না। মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ বৃহস্পতিবার আছর নামাজের পর উপজেলার পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে সকালে শাহরিয়ারের বাড়িতে আসে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবারের লোকজন। বারবার ছেলের কথা বলে চিকিৎসার করে কাঁদছিলেন মা শাহানা খাতুন। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য গোলাম মোস্তফা ছেলের এই মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।
শাহরিয়ার ছোট থেকেই ছিলেন শান্ত স্বভাবের। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল মেজো। তাঁর মৃত্যুতে চিকিৎসা নিয়ে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে শাহরিয়ারের পরিবার চিকিৎসার অবহেলাসহ মৃত্যুর পুরো ঘটনাটি তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
শাহরিয়ারের ফুপাতো ভাই রানা বলেন, ‘আমরা তার বন্ধুদের কাছে শুনেছি সে ছাদ থেকে পড়ে আহত হয়। কিন্তু কীভাবে মারা গেছে আমরা জানি না। তার বন্ধুরা জানিয়েছে ডাক্তাররা চিকিৎসায় দেরি করেছে। যদি সময়মতো চিকিৎসা শুরু হতো তাহলে হয়তো সে ভালো হতো। আমরা চাই কেউ যেন গাফিলতির শিকার না হয়।’
শাহরিয়ার একজন অতিশয় ভদ্র ছেলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাঁর মৃত্যু মেনে নেওয়া আমাদের জন্য কষ্টের।’
এদিকে শাহরিয়ারের মা শাহানা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলের এভাবে মৃত্যুর খবর পাব তা কখনো ভাবিনি। আমার সন্তান কারও ক্ষতি করতে পারে না। আমার সব কথা শুনতো, আমার সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
তার মা আরও জানান, মৃত্যুর আগেও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন শাহরিয়ার। রাতে খেয়েছেন কিনা মা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছেন। এর কিছুক্ষণ পড়েই ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পান তাঁরা।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, শারিয়ারের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি মর্মাহত। তবে, তার এই অকাল মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহ জনক। আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শাহারিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ার গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান আবাসিক হলের তিন তলা থেকে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় সহপাঠীরা। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।